পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৫৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একটা দুশ্চিন্তা। রাধামাধব আরও দেখিলেন যে, তাহার মাতুলের মস্তকটি মুণ্ডিত, তাহার মাথায় চুল নাই। একদিন তিনি মাতুলকে জিজ্ঞাসা করিলেন, — “বরমায় আপনি যেস্থানে ছিলেন, সেস্থানের জলবায়ু কি ভাল ছিল না? আপনারা দুইজনেই অতিশয় শীর্ণ হইয়া গিয়াছেন। দেখিলে বোধহয়, যেন আপনাদের শরীরে কোন একটা রোগ আছে।” মাতুল উত্তর করিলেন,- “না, আমাদের শরীরে কোন রোগ নাই।” এইরূপ উত্তর দিয়া তিনি সেকথা চাপা দিতে চেষ্টা করিলেন । রাধামাধব সে সম্বন্ধে আর কোন কথা জিজ্ঞাসা না করেন, ইহাই যেন তাহার ইচ্ছা । সেজন্য রাধামাধব, আর কোন কথা জিজ্ঞাসা করিলেন না। কিন্তু তিনি বুঝিলেন যে, তাহার মামা-মামীর শরীরে রোগ না থাকুক, মনে কোনরূপ রোগ হইয়াছে। কোনরূপ একটা ভয় অথবা দুর্ভাবনায় তাহাদের শরীর এরূপ শীর্ণ ও মলিন হইয়া গিয়াছে। পরদিন টাকাকড়ির কথা মামা নিজেই তুলিলেন। মামা জিজ্ঞাসা করিলেন,- “কেমন রাধামাধব! তুমি যেস্থানে ডাক্তারী কর, সেস্থানে দু’পয়সা হয় তো?” রাধামাধব উত্তর করিলেন,- “প্ৰথম প্রথম বেশ দু’পয়সা হইত। তাহার পর কোথা হইতে সেস্থানে এক অবতার আসিয়া উপস্থিত হইল। সেই অবধি আমার আর বড় কিছু হয় না।” মাতুল জিজ্ঞাসা করিলেন,- “অবতার কিরূপ?” রাধামাধব উত্তর করিলেন,- “গেরুয়া কাপড়পরা লোক । সেও চিকিৎসা করিয়া জীবিকা নিৰ্ব্বাহ করে। রোগীকে কখন ডাক্তারি, কখনওঁহাৈমিওপ্যাথি, কখন কবিরাজি, কখন হাকিম, কখন স্বপ্নলুব্ধ ভৌতিক ঔষধ প্ৰদান করুণািভাবে পা রাখিয়া নানা ভঙ্গ করিয়া সে বসিতে জানে। রোগীর নিকট বসিয়া ইঙ্গল্য-প্তির্ভুল নাড়ী, কুণ্ডলিনী প্রভৃতি নানা গল্প করে। সে বলে যে,- “আমি ভূত নামাইতে পারি দুৰ্ভাৰ্যক্তির আত্মকে ডাকিতে পারি। যে পৰ্যন্ত এই X মই ঔষধি আমার পসার প্রতিপত্তি একেবারে গিয়াছে। বড় চলে না। কোথা যে টাকা পাইব, সেজন্য বড় দুর্ভাবনা হইয়াছে।” মাতুল জিজ্ঞাসা করিলেন,- “সে লোকটি ভূত-প্ৰেত সম্বন্ধে যে সমুদয় গল্প করে, তাহা কি মিথ্যা?” রাধামাধব উত্তর করিলেন, — “সমুদয় মিথ্যা। ভূত আবার কোথায়? ভূত বলিয়া জগতে কোনরূপ বস্তু নাই।” মাতুল বলিলেন, — “বটে! যদি দেখিতে পাও?” রাধামাধব উত্তর করিলেন,— “এ বিষয়ে আমি নিতান্ত অনভিজ্ঞ নাহি। মৃত ব্যক্তির আত্মকে আহবান করা সম্বন্ধে ইংরেজীতে যত পুস্তক প্রকাশিত হইয়াছে, সে সমুদয় আমি পাঠ করিয়াছি। যে প্রণালী অবলম্বন করিয়া আত্মাকে আহবান করিতে হয়, বন্ধুবান্ধবের সহিত তাহা করিয়া আমি অনেক দেখিয়াছি। যেখানে ভূত আছে বলিয়া শুনিয়াছি, একেলা নিৰ্ভয়ে সেস্থানে রাত্রিযাপন করিয়াছি। ভূত দেখিবার নিমিত্ত রাত্রিকালে একেলা শশানে-মশানে অনেক ঘুরিয়াছি। একদিন দুই দিন নয়, তিন বৎসরকাল এরূপ চেষ্টা করিয়াছি। কিন্তু ভূতের চিহ্নমাত্রও আমি দেখিতে পাই নাই। ভূতের গল্প সব অলীক। ভূত বলিয়া জগতে কিছুই নাই। মাতুল বলিলেন, — “যদি প্রত্যক্ষ তোমাকে দেখাইতে পারি?” ርmbr£ află cios (gs se - www.amarboi conf**