পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৫৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হাসপাতালে চীনেম্যানের হাত সহজে পাওয়া যায় না। তথাপি রাধামাধব নিরাশ হইলেন না। এইরূপ একটি হাতের জন্য বন্ধু দিগকে তিনি বলিয়া রাখিলেন। দৈবক্রমে একসময় একজন চীনে সূত্রধর তেতালার ভারা হইতে পড়িয়া গিয়াছিল। সে একেবারে মরে নাই। তাহার একটি হাত চূর্ণ হইয়া গিয়াছিল। সেই হাতটি ছেদন করা হইল। রাধামাধব সেই হাতটি পাইলেন। পূৰ্ব্বের মত হাতটি শিশিতে রাখিয়া পুনরায় তিনি কোচের উপর শয়ন করিয়া রহিলেন। রাত্রি দুইপ্রহরের পর ভূত যথারীতি উপস্থিত হইয়া শিশিগুলি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে লাগিল। হস্তসম্বলিত শিশি দেখিয়া আজও প্রথম তাহার মনে আনন্দ হইল। কিন্তু আজও সে পূৰ্ব্বের ন্যায় কুপিত হইয়া শিশিটি আছড়াইয়া ফেলিয়া দিল। শিশিটি ভাঙ্গিয়া গেল। রাধামাধবের চেষ্টা এবারও বিফল হইল। কেন এমন হইল, তাহা তিনি বুঝিতে পারিলেন না। পরদিন প্ৰাতঃকালে মাতুল ও তিনি হাতটি ভূমি হইতে তুলিয়া নিরীক্ষণ করিয়া দেখিতে লাগিলেন। কিছুক্ষণ দেখিয়া মাতুল বলিলেন, — “ওঃ, বুঝিয়াছি! এটা বামহাত। চীনে ভূতের দক্ষিণ হাত গিয়াছে। বামহাত দেখিতে সে জানিতে পারিয়াছে যে, এটা জাল হাত, তাহার নিজের হাত নহে। সেইজন্য সে রাগ করিয়া ফেলিয়া গিয়াছে।” রাধামাধব বুঝিলেন যে, ইহাই প্রকৃত কারণ বটে। সেইদিন হইতে চীনেম্যানের দক্ষিণ হাতের জন্য তিনি সন্ধান করিতে লাগিলেন। কিন্তু একমাস। গত হইয়া গেল। তথাপি এরূপ হাতের যোগাড় করিতে পারিলেন না। রোগে মৃত ব্যক্তির হাত হইলে চলিবে কি না, সেরূপ একটা সন্দেহ মাতুল ও ভাগিনেয়ের মনে উপস্থি । এমন সময় চীনের লড়াই আরম্ভ হইল। কলিকাতা হইতে যে সমুদয় জাহাজ গমন করে, সেইরূপ জাহাজের একজন খালাসির সহিত রাধামাধব আলাপ বলিলেন,— “আরকপূর্ণ একটি শিশি তোমাকে দিতেছি। অন্ত্রাঘাতে হত। এরূপ চীনে পুরুষমানুষের দক্ষিণ হাত যদি তুমি এই শিশির ভিতর আনিয়া র, তাহা হইলে তোমাকে আমি একশত টাকা পুরস্কার দিব।” খালাসি সম্মত হইল। অস্ত্রাঘাতে সে সময় অনেক চীনে মৃত্যুমুখে পতিত হইয়াছিল। সুতরাং এরূপ একটি হাতের যোগাড় করিতে খালাসিকে অধিক কষ্ট পাইতে হয় নাই। দুই মাস পরে সেই আরকপূর্ণ শিশি করিয়া একজন চীনেম্যানের দক্ষিণ হস্ত সে রাধামাধবকে আনিয়া দিল। শিশিটি রাধামাধব অন্যান্য শিশির সহিত রাখিয়া পূৰ্ব্বের ন্যায়। সেই ঘরে শয়ন করিয়া রহিলেন। পূৰ্ব্বের ন্যায় যথাসময়ে ভূত আসিয়া একে একে শিশিগুলি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে লাগিল। পূৰ্ব্বে ন্যায় আজও সে হস্তসম্বলিত শিশিটি হাতে লইয়া নিরীক্ষণ করিয়া দেখিতে লাগিল; কিন্তু আজ তাহার মুখে ক্রোধের লক্ষণ উদয় হইল না; আজি সে ক্ৰোধে শিশিটি আছড়াইয়া ফেলিল না। আনন্দের উপর আনন্দে আজ তাহার মুখশ্ৰী প্ৰফুল্ল হইতে প্ৰফুল্লতর হইতে লাগিল। অবশেষে শিশিটি হাতে লইয়া আনন্দে সে ঘরের ভিতর দুপদীপ, ধুপ ধাপ নৃত্য করিতে লাগিল। নাচিতে নাচিতে সে “ফিং ফাং ফো, পিং পাং পো”, বলিয়া গান করিতে লাগিল। নাচিতে নাচিতে গান গাহিতে গাহিতে শিশিটি হাতে করিয়া ঘর হইতে সে অদৃশ্য হইয়া পড়িল। রাধামাধব তাড়াতাড়ি মাতুলকে ডাকিয়া এই সুসমাচার প্রদান করিলেন। কিন্তু চীনে ভূত তখনও বাটী হইতে যায় নাই। মাঝের একটি ঘরে তখন সে একপ্রকার চাপর চাপর শব্দ করিতেছিল। মাতুল, মাতুলানী ও রাধামাধব সেই ঘরের দ্বারের নিকট গিয়া দাঁড়াইলেন। সে ঘরে আলো জুলিতেছিল। দ্বারের ফাঁক দিয়া সকলে দেখিলেন যে, ঘরের মাঝখানে বসিয়া WSig Fig sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro CIS