পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৬০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় অধ্যায় পুরুষোত্তমের সৌভাগ্য কাঁদিতে কাঁদিতে গিনী-মায়ের নিকট গিয়া বিদ্যাধরী বলিল,- “মা! বামুনঠাকুর বলে যে, তোমার কোন ব্যায়রাম নাই-সব ঠাট । তোমার মাথা ঘোরে না, তোমার বুক ধড়-ধড় করে না! সোহাগ করিয়া তুমি বাবুর টাকার শ্ৰাদ্ধ করিতেছি। তোমার অরুচি নাই, তোমার গায়ে মাছি বসিলে, মাছি পিছলাইয়া পড়ে।” গিনী বলিলেন, — “বটো! বামনের তো আম্পৰ্দ্ধা কম নয়, ছোট মুখে বড় কথা।” বিদ্যাধরী বলিল,— “আমিও মা, সেই কথা বলি। আমি বলিলাম, দেখ বামুনঠাকুর, মনিবকে অমন কথা বলিতে নাই, মাকে আমি অষ্টপ্রহর দেখিতেছি। তাঁর যে কত অসুখ, সেকথা। আর বলিব কি! কেবল আমার সেবার জোরে তিনি বাঁচিয়া আছেন। এই কথা মা,- আমি যেই বলিয়াছি, আর পোড়ারমুখো বামুন আমাকে কেবল ধরিয়া মারে নাই। কত গালি দিল, কত কুকথা সে যে আমাকে বলিল,— সেকথা মা, তোমাকে আমি আর কি বলিব! সে একা নয়। বাবুর সখের চাকয়, পোড়মুখো পিতেম, আর আটকুড়ি গোলাপীও তার সঙ্গে যোগ দিল! তুমি আমায় মা, একটু ভালবাসো, সেইজন্য সকলের হিংসা। তা আমি মা! আর তোমার কাছে থাকিতে চাই না। তুমি মা, অন্য ঝি দেখিয়া লও।” পরদিন নীলাম্বরবাবু ছিদেম ব্ৰাহ্মণকে ডিসূমিস্ব যুক্তও পিতেম এবং গােলাপীকে অনেক বিদ্যাধরী নিজে মনােনীত করিয়া আর একজুৰ্নিষ্ঠভ্রাহ্মণকে লইয়া আসিল। এব্ৰাহ্মণের যেরূপ মুখশ্ৰী হয় না। মুখমণ্ডলটি প্রকাণ্ড, কিন্তু যতােটা দীৰ্ঘে, প্রন্থে ততটা নহে। বৰ্ণ শ্যামবর্ণ। কিন্তু বসন্তের দাগে সমুদয় মুখখানি নানা আকারের গৰ্ত্তে এত পূর্ণ হইয়াছে যে, ব্রাহ্মণের প্রকৃত বর্ণ কি, তাহা সহজে বুঝিতে পারা যায় না। গণ্ডদেশের উপর হাড় দুইটি এত উচ্চ হইয়া আছে যে, দুই পার্শ্বে চক্ষু দুইটি যেন দুইটি কূপের মতো বােধ হয়। দুই চক্ষুর মাঝখানে নাসিকা অতি দীর্ঘ ও উচ্চ। মুখের হাঁ বৃহৎ পুষ্করিণীর ন্যায় প্রশস্ত। সে মুখের হাসি দেখিলে মানুষের আত্মা-প্ৰাণ শুকাইয়া যায়। চক্ষু ও চুলের বর্ণ তামের ন্যায়; হাজার তেল মাখিলেও চুলের রুক্ষতা যায় না। ব্ৰাহ্মণের নাম পুরুষোত্তম, বাস উৎকল দেশে। ঝগড়ার পর বিদ্যাধরী, কিছুদিন ধরিয়া মুদী ও ময়রা কাহার নিকট আর কিছু চায় নাই। দুই দিন পর সে পুরুষোত্তমকে বলিল,- “বামুনঠাকুর! আমাকে তুমি যেমন-তেমন ঝি মনে করিও না। এই দেখ, গলায় আমার কেমন সোনার দানা; এই দেখ, হাতে আমার মোটা তাগা। আর আমার ঘরে হাঁড়ি করিয়া ছয়শ টাকা আমি পুতিয়া রাখিয়াছি। কোন কুলে আমার কেহ নাই। আমি অধিক দিন বঁচিব না। আমার বড় অরুচি। বৈকালবেলা রোজ চক্ষু জ্বালা করিয়া জুর হয়। বাঁচতে আমার সাধ নাই। মরণ হইলেই বাঁচি! কিন্তু পোড়া যম আমাকে ভুলিয়া আছে। আত্মহত্যা করিলে অগতি হইবে, তা না হইলে আমি কোন কালে আফিম খাইয়া, কি গলায় দড়ি দিয়া, কি জলে ডুবিয়া মরিতাম। যাহা হউক, অধিক দিন আমি আর বঁচিব না। আমার গহনা ও টাকাগুলি আমার মরণের পর তোমার মত কোন একটি ব্ৰাহ্মণের ছেলে পায়, তাহাই আমার ইচ্ছা।” 巫互究g sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro (**