পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৬১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গরম হইয়া থাকে। তাহার কটুবাক্যে সকলেই বিরক্ত। পাড়াপ্রতিবাসী আত্মীয়স্বজন কাহারও সহিত তাঁহার সদ্ভাব নাই, এমন কি, তাহার পুত্রদিগের সহিতও তাঁহার সম্প্ৰীতি ছিল না। জ্যেষ্ঠ পুত্রবধূ তাহার তাড়নায় সৰ্ব্বদাই জৰ্জ্জৱীভূত। অল্পবয়সে তিনি বিধবা হইয়াছেন। কিন্তু শিশুপুত্রটির লালন-পালনে ব্যস্ত থাকিয়া তিনি সকল দুঃখ বিস্মৃত হইয়াছেন। পুত্রটির বয়স এক্ষণে পাঁচ বৎসর। তাহার নাম বিনয়। বিনয় অতি সুবোধ ও শান্ত বালক । পিতামহ সংসারে কখন কাহাকেও ভালোবাসেন নাই। একমাত্র বিনয়ের প্রতি কেবল তাঁহার যৎকিঞ্চিৎ স্নেহ জনিয়াছিল। এক বিনয় ভিন্ন আর কেহ তাঁহার নিকট যাইতে অথবা তাঁহার সহিত কথা কহিতে সাহস করিত না । কিন্তু আজ বিনয়ের উপরও তাঁহার রাগ হইয়াছে। বিনয় কোন দোষ করে নাই, বিনয়ের মাতাও কোনও দােষ করে নাই। দােষ করিয়াছিলেন, বিনয়ের মাতামহ মৃত্যুঞ্জয় নস্কর। বিনয়ের মাতার এক অবিবাহিতা ভগিনী আছে, তাহার রূপ ও গুণের সুখ্যাতি রায় মহাশয় অনেক লোকের মুখে শুনিয়াছিলেন। হৃষীকেশের সহিত তাহার বিবাহ দিবার জন্য রায় মহাশয় ইচ্ছা করিয়াছিলেন। কিন্তু কন্যার পিতা সে প্রস্তাবে সম্মত হন নাই। বৈবাহিককে তিনি স্পষ্ট বলিলেন যে,- “তোমার ধন থাকিলে কি হইবে? আমার জ্যেষ্ঠা কন্যাকে তুমি একদিনও সুখী করা নাই। আমার জামাতা,- তোমার পুত্ৰ-তােহর সহিত তোমার সদ্ভাব ছিল না। তোমার তর্জন-গৰ্জ্জনে সে অল্পবয়সে মরিয়া গেল, আমার কন্যা বিধবা হইল। তাহাকেও তুমি একদিনের জন্যও সুখে রাখ নাই। আমার যদি অবস্থা ভাল হইত, তাহা হইলে তোমার বাড়ীতে একদিনের জন্য বিধবা কন্যাকে আমি থাকিতে । বিনয় ও তাহাকে আনিয়া আমার ঘরে রাখিতাম। আমার কনিষ্ঠা কন্যা অন্নপূর্ণ — লক্ষ্মীস্বরূপ কন্যা। চির দুঃখিনী হইবার জন্য তোমার বাড়িতে তাহাকে আমি পারি না।” নস্কর মহাশয়ের এই উত্তর শুনিয়া রায় য়র মন রাগে পরিপূর্ণ হইল। সেই কথা লইয়া পুত্রবধূকে তিনি সৰ্ব্বদাই ভৎসনা লাগিলেন। যখন হৃষীকেশ বাড়ী হইতে পলায়ন করিলেন, তখন তাঁহার রাগের আর 'পরিসীমা রহিল না। তিনি ভাবিলেন যে, সুরূপা সুলক্ষণা অন্নপূর্ণার সহিত বিবাহ দিলে পুত্ৰ দেশত্যাগী হইত না। এইরূপ ভাবিয়া পুত্রবধূকে তিনি দিবারাত্র তিরস্কার করিতে লাগিলেন। পুত্ৰ হৃষীকেশের প্রতি তাহার যে প্ৰগাঢ় স্নেহ-মমতা ছিল, তাহা নহে। ক্ৰোধে অভিভূত হইবার, লোককে গালি দিবার একটি কারণ পাইয়াছেন, তাহাই তাহার পক্ষে যথেষ্ট। অহােরাত্রি তিরস্কারের জ্বালায় পুত্রবধূর জীবন অসহনীয় হইয়া উঠিল। সমস্ত দিন আহার না করিয়া অবিরল ধারায় চক্ষের জল ফেলিতে লাগিলেন। রায় মহাশয়ের রাগ তাঁহাতে আরও বৃদ্ধি হইল। পুত্রবধূর প্রতি নানারূপ নিদারুণ বাক্য প্রয়ােগ করিয়া অবশেষে তিনি বলিলেন, — “তোমার পিতার দোষে আমার পুত্ৰ বিবাণী হইয়া গেল। তোমার পিতা বলে যে, তোমাকে এখানে থাকিতে দিতে তাহার ইচ্ছা নাই। পুত্ৰ লইয়া তুমি আমার বাটী হইতে দূর হও!” বিধবা পুত্রবধূ, কৰ্ত্তার নিষ্ঠুর বাক্য আর সহ্য করিতে পারিলেন না। শিশুপুত্রটির হাত ধরিয়া তিনি বাটী হইতে বাহির হইলেন, তাহার পর অতিকষ্টে পিতার ভবনে গিয়া উপস্থিত হইলেন। পিতা বলিলেন যে,- “মা ! যদি আমাদের একমুঠা জোটে, তাহা হইলে তাহার আধমুঠা তোমাকে ও তোমার পুত্রকে আমরা দিবো। সে নরাধমের বাড়ীতে আর তোমার গিয়া কাজ नाई।" ଅysist ମୃତ୍ୟୁ sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro