পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৬১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এই বলিয়া বিনয় স্নেহের সহিত পিতামহের মাথার নিকট আপন মাখাটি রাখিল । পিতামহ জিজ্ঞাসা করিলেন,- “দালানে ঠাকুর গড়া কতদূর হইয়াছে?” বিনয় উত্তর করিল,— “কুমার আসিয়া খড়ের দুর্গা, গণেশ, কাৰ্ত্তিক, এইসব করিয়া গিয়াছে। তাহার পর তোমার ব্যায়রাম হইল, সেইজন্য আর কিছু হয় নাই।” পিতামহ জিজ্ঞাসা করিলেন— “ঠাকুর দেওয়ালে বাধা আছে?” বিনয় উত্তর করিল,— “ঠাকুরের পিছনে দালানের দেওয়ালের গায়ে মোটা গজাল পোতা আছে। ঠাকুরের পিছনে বঁাশ মোটা দড়ি বাধা আছে। সেই দড়ি দেওয়ালের গজালের সহিত বাধা আছে।” রায় মহাশয় বলিলেন,- “বেশ! রাত্রিতে চুপি-চুপি দালানে গিয়া সেই দড়ি কাটিয়া, ঠাকুর ফেলিয়া দিতে পাৱ?” বিনয় বলিল,— “দালনে ভূত নাই তো?” পিতামহ উত্তর করিলেন, — “না, দালানে ভূত নাই। যদি তোমার ভয় হয়, তবে কাজ নাই। কিন্তু দড়ি কাটিয়া ঠাকুর যদি ফেলিয়া দিতে পাের, তাহা হইলে আমি ভাল হইব। তা না করিলে হয়তো আমি মরিয়া যাইব ।” বিনয় বলিল,— “তবে আমি নিশ্চয় তা করিব, দালানে ভূত থাকুক আর নাই থাকুক, আমি নিশ্চয় তা করিব। আমি বিয়ের কাছে শুই! কাজকৰ্ম্ম সারিয়া ঝি অনেক রাত্রিতে ঘরে আসে। কিন্তু যেমন করিয়া পারি, আজ রাত্ৰিতে আমি জাগিয়া । তাহার পর ঝি ঘুমাইলে আমি বাহির বাটীতে দালানে গিয়া দড়ি কাটিয়া ঠাকুর ফুেলিয়া দিব। কিন্তু ঠাকুরদাদা! আমি ছুরি কোথায় পাইব?” খাটের নিম্নে একটি বাক্স ছিল। পিতামহন্তে সেই বাক্সটি আনিতে বলিলেন। শয়ন করিয়াই অতিকষ্টে তিনি বাক্সটি খুললেন, ৬ষ্ঠ হাঁর ভিতরে বৃহৎ একখানি চাকু ছুরি ছিল। বিনয়কে সবার খুঁটিলয়া তাহার পর মুড়িয়া রাখিল। রায় মহাশয় তাহার পর বাক্স হইতে একখানি কাগজ বাহির কঁরিয়া বিনয়ের হাতে দিলেন ও দিয়াসলাই জ্বালাইয়া তাহা পোড়াইয়া ফেলিতে বলিলেন। পিতামহের আদেশে বিনয় তাহার পর সে ছাইগুলি জানালা দিয়া বাহিরে ফেলিয়া দিল। যে উইলে রায় মহাশয় হড়াদিগকে আপনার সম্পত্তি দিয়াছিলেন, সেই উইল। এইরূপে তিনি ধ্বংস করিয়া ফেলিলেন। উইল রেজেষ্টারি করা হয় নাই। তাহার পর রায় মহাশয় বলিলেন, — “ছুরি লুকাইয়া রাখা। ঠাকুর ফেলার কথা কাহাকেও বলিও না। আজ তবে যাও, কাল সকালবেল পুনরায় আমার সঙ্গে দেখা করিও।” রাত্রি দশটা বাজিয়া গেল। ঝি তবুও ঘরে আসিল না। নিদ্রায় চক্ষু বুজিয়া আসিতে লাগিল! অনেক কষ্টে কিছুক্ষণের নিমিত্ত বিনয় জাগরিত রহিল। কিন্তু আর পারিল না, কে যেন তাহার চক্ষু দুইটি বলপূৰ্ব্বক চাপিয়া দিল। কতক্ষণ বিনয় নিদ্রা গিয়াছিল, তাহা সে ঠিক বলিতে পারে না। কিন্তু সহসা তাহার চক্ষু নিদ্রাভঙ্গ হইল। কিছুক্ষণ নিস্তব্ধ থাকিয়া সে ভাবিতে লাগিল । পিতামহের আদেশ ক্রমে ক্রমে তাহার স্মরণ হইল। তখন তাহার ভয় হইল। সে তাবিল,- “ঐ যা! সকাল বুঝি হইয়া গিয়াছে।” বিনয় কান পাতিয়া কিছুক্ষণ শুনিল,— চারিদিক নিস্তব্ধ, মানুষের সাড়াশব্দ নাই। জানালার দিকে চাহিয়া দেখিল,—সব অন্ধকার। হাত বাড়াইয়া দেখিল,—ঝি কাছে শুইয়া আছে, অঘোরে নিদ্ৰা যাইতেছে। তখনও রাত্রি আছে, সকাল হয় নাই। মজার গল্প SSS sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro