পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৬২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

“কে। একজন বেলগাছে উঠিয়াছে; বোধ হয় পাগল! ঝিকি মিকি ফিকি ফিকি—কি সব আব্বলতাবল বিকিতেছে।” রায় মহাশয় বলিলেন,- “আস্তে আস্তে উহাকে নামাইয়া আমার কাছে লইয়া আইস ।” নীচে মানুষের গোলমাল শুনিয়া অন্নপূর্ণার সাহস হইল। কি হইতেছে, তাহা দেখিবার নিমিত্ত সেও আপনার ঘরের জানালা খুলিয়া জানালার ধারে দাঁড়াইল। ঘরের আলো দ্বারা অন্নপূর্ণার মুখ আলোকিত হইল। বেলগাছে যে মানুষ উঠিয়াছিল, অন্নপূর্ণাকে দেখিয়া সে চীৎকার করিয়া বলিল,- “ঐ সে! ঐ সে! ঐ সে! ঐ সে!” এই কথা বলিয়া বেলগাছ হইতে সে নীচে পড়িয়া গেল। গাছ হইতে পড়িয়া একেবারে সে অজ্ঞান হইয়া গেল। তাহাকে ধরাধরি করিয়া সকলে বাড়ীর ভিতর আনিল। রায় মহাশয় ততক্ষণ নীচে আসিয়া সকলকে বলিলেন,- “তোমরা গোল করিও না; এ আমার কনিষ্ঠ পুত্ৰ হৃষীকেশ । ইহাকে উপরে আমার ঘরে লইয়া চল ।” হৃষীকেশকে সকলে উপরে লইয়া গেল। মুখে-হাতে জল দিয়া বাতাস করিয়া সকলে তাহার চৈতন্য উৎপাদনের নিমিও চেষ্টা করিতে লাগিল। পৈতার সহিত সংলগ্ন ক্ষুদ্র একখানি গোল আরসির ন্যায় তাহার বুকে কি বুলিতেছিল। পৈতা হইতে সেই বস্তু খুলিয়া বৃন্দাবন রায় মহাশয়ের হাত দিল। রায় মহাশয় আলোতে তাহা ভালরূপ নিরীক্ষণ করিয়া নস্কর মহাশয়ের তাহা দেখিলেন। অবশেষে তিনি বলিলেন,— “আশ্চৰ্য্য কুত্থা! এ যে আমার অন্নপূর্ণর ছবি।” সকলে একে একে সেই ছবি দেখিলেন। রতর বিস্ময়াপন্ন হইলেন। হৃষীকেশ অন্নপূর্ণাকে কখন দেখে নাই; অন্নপূর্ণার ছবি তুলে নাই; তবে এ ছবি কোথা হইতে আসিল! কৃষ্ণ কিছুক্ষণের জন্য রায় মহাশয় ও'নিস্কর মহাশয় ঘর হইতে চলিয়া গেলেন। অল্পক্ষিণ পরে তিনি অন্নপূর্ণাকে লইয়া আসিলেন। লজ্জায় অধোবদন হইয়া অন্নপূর্ণা হৃষীকেশের সম্মুখে দাঁড়াইল । হৃষীকেশ বলিলেন,- “সেইমুখ, সেই ফুল, সেই রূপ, ময়ুর আঁকা সেই লাল কাপড়, হাতে সেই রাঙ্গা কড়া!” কাপড়খানি সেকেলে ধরনের চেলি। রায় মহাশয় সেইদিন অন্নপূর্ণাকে দিয়াছিলেন। হৃষীকেশ ক্রমে সুস্থ হইলেন। পুরুষগণ ঘর হইতে চলিয়া গেলে, বাড়ীর স্ত্রীলোকেরা আসিয়া তাঁহার কাছে বসিলেন। ছবি তুলিতে গিয়া কিরূপে অন্নপূর্ণার ছবি উঠিয়াছিল, পথের চাকার উপর কিরূপে পেতনী উঠিয়াছিল, কিরূপে বাটী হইতে পলায়ন করিয়া দেশে দেশে তিনি অন্নপূর্ণাকে অন্বেষণ করিয়াছিলেন, কিরূপে তাঁহার মুখে,— “কালো মেঘে ঝিকিমিকি,— সতী হাসে ফিকিফিকি", এই কথা ভিন্ন অন্য কথা ছিল না, সেই সমুদয় পরিচয় তিনি বিনয়ের মাতা ও আর সকলকে দিলেন। অবশেষে তিনি বলিলেন, — “আমি ঠিক পাগল হই নাই, আমার জ্ঞান সম্পূর্ণ ছিল। কিন্তু অন্য কথা আমি বলিতে পারিতাম না; অন্য কথা বলিতে গেলেই ঐ কথাটি আপনা-আপনি আমার মুখ দিয়া বাহির হইয়া পড়িত। কিছুতেই আমি তাহা নিবারণ করিতে পারিতাম না। অন্নপূর্ণর ছবি সৰ্ব্বদাই আমার বুকের উপর রাখিতাম। পাছে WeSqo frig -ibs gas sell - www.amarboicomf: