পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৭২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তখন রাজাবাবু সৰ্ব্বদাই আমার নিকট আসিতেন। দক্ষিণা গ্রহণের নিমিত্ত এই বাড়ীতে আসিতে ক্রমাগত তিনি আমাকে বলিতেন। গুপ্তস্থান নির্দেশ করিয়া দিবার নিমিত্ত তিনি অঙ্গীকার করিয়াছেন। কিন্তু বার বার বিফলমনোরথ হইয়া আমি হতাশ হইয়া পড়িয়াছি। আমি ভাবিলাম যে, রাজাবাবু স্থান দেখাইয়া দিলেও গৃহস্বামীর সহায়তা ব্যতীত আমি কিছুতেই এ অর্থ লাভ করিতে পারিব না। সেজন্য আমি স্থির করিলাম যে, এবার সুস্থ অবস্থায় গিয়া তাহাকে সকল কথা প্ৰকাশ করিয়া বলিব। রাজাবাবু সমস্ত ধন আমাকে দিয়াছেন সত্য কিন্তু আমি ভাবিলাম যে, বৰ্ত্তমান গৃহস্বামী তাহা আমাকে দিবেন না। সমুদয় অর্থ না হউক, অন্ততঃ তাহার কিয়দংশ তিনি আমাকে প্ৰদান করিবেন, তাহা লইয়া হিমালয় পৰ্ব্বতের কোন নিৰ্জ্জন প্রদেশে অবস্থান করিয়া আমি অবশিষ্ট জীবন তপস্যায় অতিবাহিত করিব। এই মানসে- ” বড়ালমহাশয় জিজ্ঞাসা করিলেন, — “তবে তোমার নাকের জন্য এ স্থানে তুমি আগমন কর নাই?” দীর্ঘনিঃশ্বাস পরিত্যাগ করিয়া খাদা ভূত জিজ্ঞাসা করিল,- “কোথায়? কোথায়? কোথায়?” কৰ্ত্তিত নাসিকার জন্য তাহের মনের আবেগ ও কাতরভাব দেখিয়া সকলে বিস্মিত হইলেন । খাদা ভূত খেদ করিয়া বলিতে লাগিল,— “হায়, আমার নাক! ক্ষিপ্ত অবস্থায় নাকের শোকে আমার হৃদয় যে কিরূপ সন্তপ্ত হয়, তাহা আর তােমাদিগকে কি বলিব! গঙ্গামূত্তিকা দিয়া লোকে যেরূপ শিবলিঙ্গ গড়িয়া পূজা করে ও তাহার পর জলে নিক্ষেপ করে, আমিও সেইরূপ নদীকূলে বসিয়া বার বার স্মৃত্তিকা দ্বারা নাসিকা নিৰ্মাণ কৰুি, পরিধান করিয়া জলে তাহা নিক্ষেপ করি। কোথায় আমার নাকি? সে কৰ্ত্তিত খেলিত শুষ্ক নাসিকা পাইলেও আমি অনেকটা শান্তিলাভ করি ।” তাহার ভাবভঙ্গী দেখিয়া সকলে ভ যে, খাদা ভূতের এইবার বুঝি ক্ষিপ্তদশা উপস্থিত হইল । সেজন্য অন্যপ্ৰসঙ্গ উত্থাপিতৃৎক্ষরিয়া বড়ালমহাশয় নাকের কথা চাপা দিতে চেষ্টা করিলেন । বড়ালমহাশয় জিজ্ঞাসা করিলেন, “সোনার ইট সম্বন্ধে এক্ষণে তোমার মানস কি? খাদা ভূত উত্তর করিল,- “এখন ভাদ্র মাসের শেষ ভাগ। এবার নিশ্চয় ক্ষিপ্ত হইব। রাজাবাবু সেই সময় আমার সহিত সাক্ষাৎ করবেন ও কোন স্থানে সোনার ইট লুক্কায়িত আছে, তাহা তিনি আমাকে দেখাইয়া দিবেন। তোমাদের সহায়তায় আমি তাহা বাহির করিব। তাহার কিয়দংশ তোমরা আমাকে প্ৰদান করিবে। তাহা লইয়া আমি প্ৰস্থান করিব। আর কখনও এ গ্রামে আসিব না। আমার আর একটি নিবেদন এই যে, গ্রামবাসীদিগের সহিত আমি সাক্ষাৎ করিতে ইচ্ছা করি না। কালা-বাবা বলিয়া একদিন তাহারা আমাকে পূজা করিত। পূজনীয় সেই কালা-বাবা নাসিকা-বিহীন খাদা ভূত হইয়া আমাদিগকে উৎপীড়িত করিয়াছিল, তাহা জানিতে পারিলে সকলে আমাকে অতিশয় ঘূণা করিবে। আমার প্রার্থনা এই যে, ভদ্র মাসের অবশিষ্ট কয়টা দিন আমাকে তোমরা এ অন্ধকার ঘরে লুক্কায়িত থাকিবার নিমিত্ত অনুমতি প্ৰদান কর। লুক্কায়িত ধন বাহির হইলে, ক্ষিপ্ত অবস্থা গত হইলে, আমি এ স্থান হইতে চলিয়া যাইব ।” সুবালা ও বিনয়কে সঙ্গে লইয়া বড়ালমহাশয় বারেণ্ডায় গমন করিলেন। সে স্থানে চুপি চুপি তাহারা পরামর্শ করিতে লাগিলেন। বড়ালমহাশয় বলিলেন, — “রাজাবাবুর পিতা ও তিনি নিজে অনেক অর্থ সঞ্চয় করিয়াছিলেন। সেই ধন এই বাড়ীতে কোন স্থানে লুক্কায়িত আছে। পাপের পরিণাম sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro aya