পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৭৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তাহার মন হইতে এখনও দূর হয় নাই। ধন দিয়া পুণ্ডৱীক অনেক বস্তু ক্ৰয় করিতে পারে, কিন্তু পুত্ৰ-কন্যা প্রভৃতি প্রিয়জনের পরমায়ুকে ক্রয় করিতে পারে না। আমি নিশ্চয় বলিতেছি। যে, যেদিন তাহার পাপবৃক্ষ পরিবদ্ধিত হইয়া ফল উৎপাদনা করিবে, যেদিন সেই ফল পরিপুষ্ট হইবে, সেইদিন পুণ্ডরীককে যমযন্ত্রণায় ছটফটু করিতে হইবে।” “বাস্তবিক তাহাই হইয়াছে। পুণ্ডরীকের সে তিন পুত্র ও তিন পুত্রবধু এখন কোথায়? যেমন পুণ্ডরীক, তেমনি তাহার পত্নী। তিনিও অতি শুদ্ধাচারিণী। তিনিও সৰ্ব্বদা জপ৷ করেন। যখন পুত্রবধূ ঘরে ছিল, তখন তিনি জপ করিতেন ও ভাবিতেন,— “কিরূপে বৈবাহিকের নিকট হইতে কিছু আদায় করিব, কিরূপ গালি দিয়া পুত্রবধূকে তাড়না করিব।” তিনি বলিতেন,- “বেটার বিবাহ দিয়াছি; বৈবাহিককে যেন-তেন-প্রকারেণ দুহিয়া লইব না?” আহা! সে যেটার গৌরব এখন তাহার কোথায়? বড় বৈবাহিক যথেষ্ট টাকা ও জিনিসপত্র দিয়াছিলেন। কিন্তু কিছুতেই পুণ্ডৱীক ও তাঁহার পত্নীকে সন্তুষ্ট করিতে পারেন নাই। বড় পুত্রবধূকে রাত্রিদিন তাহারা যন্ত্রণা ও গঞ্জনা দিতেন। পুণ্ডৱীকের মধ্যম পুত্র তাহার সহিত অযথা তামাসা করিত। পুত্ৰবধু কাঁদিয়া শ্বশুর-শাশুড়ীর নিকট নালিশ করিলে তাঁহারা কিছু বলিতেন না, বরং এই কাৰ্য্যে মধ্যম পুত্রকে উৎসাহ প্ৰদান করিতেন। কিছুদিন পরে তাহারা পুত্রবধূর নামে কলঙ্ক রটাইলেন। জ্বালা, যন্ত্রণা, গঞ্জনা, তাহার উপর নিন্দা অপবাদ! বড় পুত্রবধূ তাহা সহ্য করিতে না পারিয়া অবশেষে সে হতভাগিনী গলায় দড়ি দিয়া মরিল। ༩༽ মধ্যম বৈবাহিকের সহিত প্ৰথম হইতেই পুঙ্গুস্তক্টর মুখ দেখাদেখি ছিল না। পাড়া হইল। পুণ্ডরীক মধ্যম পুত্রবধূকে ঘরে ংগু না। কিছুকাল পিত্ৰালয়ে বাস করিয়া সে এক্ষণে খৃষ্টীয় সম্প্রদায়ের আশ্রয় হইতে চলিয়া গিয়াছে। কনিষ্ঠ পুত্রবধূ অর্থাৎ হাটখোলার “সেই বৃদ্ধ ব্ৰাহ্মণের কন্যা ললিতা রোগে মারা গিয়াছে। পুণ্ডৱীকের কন্যাও মৃত্যুমুখে পতিত হইয়াছে। হইয়াছে। মধ্যম পুত্র টাকা-কড়ি সম্বন্ধে পিতার সহিত বিবাদ করিয়া আফিম খাইয়া মরিয়াছে। কনিষ্ঠ পুত্র রোগাক্রান্ত হইয়া অকালে কালগ্ৰাসে পতিত হইয়াছে। মানুষের দেহ অতি ক্ষণভঙ্গুর। পুণ্ডরীক-পত্নীর ন্যায় বেটার অহঙ্কার করিতে নাই। পুণ্ডরীক ও তাঁহার স্ত্রী ব্যতীত তাঁহার সংসারে এখন আর কেহ নাই। পুণ্ডৱীক নিজেও অন্ধ হইয়া আছেন। এরূপ অবস্থা প্রাপ্ত হইয়াও টাকার মায়া তিনি পরিত্যাগ করতে পারেন নাই। যতই বৃদ্ধ হইতেছেন, ততই যেন ধনলালসা তাঁহার বৃদ্ধি হইতেছে। তাঁহার টাকা কে ভোগ করিবে, তাহার ঠিক নাই; কিন্তু তিনি এখন ভয়ানক কৃপণ হইয়াছেন। পয়সা খরচ করিতে তাহার বুক যেন ফাটিয়া যায়। তাঁহার গৃহিণী ভাল মাছ, ভাল তরকারী, ভাল জলখাবার গোপনে আনাইয়া ভোজন করেন; কিন্তু পুণ্ডরীক' তাহা জানিতে পারিলে অনৰ্থ করেন। সেজন্য ঘরে থাকিলেও তাঁহার স্ত্রী কোন ভাল দ্রব্য তাঁহাকে দিতে সাহস করেন না। একদিন তাহার স্ত্রী গলদা চিংড়ী মাছের ঝোল করিয়া আহার করিতেছিলেন। ঝোল মাখিয়া ভাত খাইবার সময় সমান্য একটু সপৃ সম্প্র শব্দ হইয়াছিল। কোথায় কি হয়, কে কি খায়, সেজন্য অন্ধ সৰ্ব্বদাই ԳՏՀ YifnRIlg{ °ii%<5 q<5 zR8! ~y www.amarboi.comñ?5°tr°V°l7° *P""PR***