পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৭৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উইল করিয়াছিলেন, তাহা আপনি অবগত আছেন। তাহার পর কি হইয়াছে, তাহাও আপনি জানেন। কিন্তু এখন আমি বুঝিয়াছি যে, এই সম্পত্তি আপনার, আমার নহে। অতএব আপনি আসিয়া আপনার সম্পত্তির ভার গ্ৰহণ করুন। আমি আমার কাকামহাশয়ের বাড়ীতে চলিয়া যাই । আপনি এ স্থানে আগমন করিলে সকল কথা পরিষ্কার করিয়া বলিব। আমি সামান্য বালিকা আমার প্রতি অনুগ্রহ করিয়া শীঘ আসিবেন।” কিছুক্ষণ পরে বিনয়কে সঙ্গে লইয়া বড়ালমহাশয় সুবালার নিকট আগমন করিলেন। তিনি বলিলেন,- “গতকল্য খাদা ভূত আমাকে জিজ্ঞাসা করিয়াছিল,— একদিন রাত্রিতে বাগানে বসিয়া তুমি কি করিতেছিলে? তখন আমি কোন উত্তর প্রদান করি নাই। এস, আজ আমি তাহার উত্তর দিব। দুইটা শাকচুন্নি ও চপলার সমস্যা বোধ হয় তাহাতে মীমাংসা হইবে।” বিনয় ও সুবালাকে সঙ্গে লইয়া বড়ালমহাশয় প্রথম নিম্নতলার পূর্বদিকে যে ঘরে ঘুটে ও কাষ্ঠ থাকে ও যে ঘরের জানালার গরাদ খুলিয়া খাদা ভূত বাটীর ভিতর আসিত, সেই ঘরে গমন করিলেন। বড়ালমহাশয় জানালার দুইটি কাষ্ঠনিৰ্ম্মিত গরাদ ধরিয়া টানিলেন। গরাদ দুইটি অনায়াসে তিনি খুলিতে পারিলেন। সেই পথে বাহির হইয়া তিনজনে বাগানে গিয়া উপস্থিত হইলেন। বড়ালমহাশয় পুনৰ্ব্ববার গরাদ দুইটি জানালাতে দিয়া দিলেন। জানালা হইতে প্ৰায় দশহাত দূরে দুইজন মালী ও একজন গ্রামবাসী দাঁড়াইয়াছিল। স্থান নির্দেশ করিয়া বড়ালমহাশয় তাহাদিগকে খনন করিতে বলিলেন। প্রথম সে স্থানের মৃত্তিকা খনন করিয়া তাহারা সরাইয়া ফেলিল। সুবালা ও বিনয় হইয়া দেখিলেন যে, মৃত্তিকার নিম্নে অনেকগুলি ইট পাশাপাশি সজ্জিত রহিয়াছে মালী ইটগুলি সরাইয়া ফেলিল। বড়ালমহাশয় বলিলেন, — “তোমাদিগকে এক্ষণে কিছু পূৰ্ব্ব-বৃত্তান্ত বলিব, তবে তোমরা বুঝিতে পরিবে। এই বাটী ও এই সম্পত্তি রাজাবাবুর পিতৃ-পিতামহের নহে। ইহা আর একজনের ছিল—তাহার বংশ এক্ষণে লোপ হইয়াছে। রাজাবাবুর পিতা পূৰ্ব্বদেশের লোক । তিনি এই সম্পত্তি ক্ৰয় করেন। সম্পত্তি ক্ৰয় করিয়া এই গ্রামে আসিয়া তিনি বাস করিলেন। সে জন্য এ স্থানে রাজাবাবুর জ্ঞাতি-গোত্র, আত্মীয়-স্বজন কেহ নাই। পূৰ্ব্বদেশে থাকিলেও থাকিতে পারে। তাহা আমি জানি না। রাজাবাবুও বোধ হয় জানিতেন না। যাহারা এই বাটী নিৰ্ম্মাণ করাইয়াছিলেন ও এই বৃহৎ বাগানের পত্তন করিয়াছিলেন, তাহারাই এই কূপ খনন করাইয়াছিলেন। গ্ৰীষ্মকালে নদী শুষ্ক হইলে পুষ্করিণীর জল শুষিয়া লয়। বাগানের গাছ যখন ছোট ছিল, তখন তাঁহাতে জলসেচনের নিমিত্ত বোধ হয় ভূস্বামী এই কূপ খনন করাইয়াছিলেন। রাজাবাবুর সময়ে বৃক্ষসকল বড় হইয়াছিল, জলসেচনের আবশ্যকতা ছিল না। মানুষ কি গরু-বাছুর পাছে পড়িয়া যায়, সেজন্য কূপের চারিধাের আমরা কাঠ দিয়া ঘিরিয়া রাখিতাম। রাজাবাবু একবার আমাকে বলিলেন,- “ও কৃপটা আর কেন? কৃপটা মাটি ফেলিয়া বুঝাইয়া দাও।” আমি ভাবিলাম, কৃপটা একেবারে নষ্ট করিয়া ফেলিব না। সেজন্য রাজাবাবুর অনুমতি লইয়া চতুষ্কোণ তক্তার পাট প্রস্তুত করিলাম ও তাঁহা দিয়া কূপের মুখ চাপা দিলাম। তক্তা শীঘ ԳՖ8 দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.comপূির্ডািস্টন/********