পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৭৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চালিতাম। কখন বা পথ চালিতাম না। পথে ঘাটে গাছতলায় পড়িয়া থাকিতাম। কুকুরকে যেরূপ লোকে আহারীয় সামগ্ৰী ফেলিয়া দেয়, সেইভাবে যদি কেহ আমাকে কিছু খাইতে দিত, তবেই আমি খাইতাম, নতুবা অন্যহারে আমি পড়িয়া থাকিতাম। দুৰ্ব্বলতায় তখন আর পথ চলিতে পারিতাম না। মৃত্যুকামনা করিয়া পথের পার্শ্বে অথবা গাছতলায় পড়িয়া থাকিতাম। মুমূর্ষ। অবস্থায় পথে পতিত দেখিয়া কতবার লোকে আমাকে হাসপাতালে লইয়া গিয়াছিল। ইচ্ছায় হউক, অনিচ্ছায় হউক,-তোমার আদেশ প্রতিপালিত হইয়াছে। যে স্থানে পরম সুখ উপভোগ করিয়াছিলাম, যে স্থানে পরে এই মুখ পুড়িয়াছিল, বহুকাল পরে পুনরায় সেইস্থানে আসিয়াছি। “এখন, রাজাবাবু আমাকে ক্ষমা কর। তুমি দয়াময়। ক্ষমার পাত্রী আমি না হইলেও নিজ গুণে তুমি আমাকে ক্ষমা কর। হায়, রাজাবাবু! তোমার কি মনে পড়ে—একবার আমার জুর হইয়াছিল। আহার-নিদ্ৰা পরিত্যাগ করিয়া দুই হাতে আমার একটি হাত ধরিয়া, আমার মুখের দিকে চাহিয়া দিবারাত্ৰি তুমি আমার পার্শ্বে বসিয়াছিলে? হায়! সে একদিন গিয়াছে, আর আজ একদিন । এ সামান্য জুর নয়। ভীষণ দাবানলে আমি দগ্ধ হইতেছি, তথাপি তোমার স্নেহ নাই, তোমার মমতা নাই, তোমার দয়া নাই। কিন্তু তোমার দোষ নাই, রাজাবাবু! কালভুজঙ্গীকে কে দয়া করে? কুল-ভুজঙ্গী অপেক্ষাও আমি অধম। আমি পিশাচী । আর আমার সহ্য হয় না। শরীর দগ্ধ হইতেছে, কিন্তু একবারে ভস্মীভূত হয় না কেন? তোমার জন্য যে শূল আমরা প্রস্তুত সেইরূপ শত শত উত্তপ্ত রক্তবর্ণের শূল দিয়া কে যেন মুহুর্মুহুঃ আমার মস্তিষ্ক বিদীর্ণ করিতেছে ও হৃৎপিণ্ড বিদ্ধ করিতেছে। নিদ্রা? —কতকাল যাই নাই, তাহা বলিতে পারি না। নিদ্ৰা কাহাকে বলে, তাহা ভুলিয়া গিয়াছি। আমি খাটের উপর শয়ন করিলাম । পা আমার মাথার উপরে দাও । পাপের যথেষ্ট প্ৰায়শ্চিত্ত হইয়াছে। এখন য়র একটু ধূলা আমার মাথায় পড়িলেই আমি শান্তিলাভ করি। দাও, একবার তে অনাথিনী দুঃখিনীর মাথায় ভুলিয়া দাও। এই আমি চক্ষু বুজিলাম। একটু পদধূলি দাও, যেন নিদ্রার আবেশে ক্ষণকালের নিমিত্তও এ নিদারুণ যন্ত্রণা বিস্মৃত হই।” সোনা-বীে অল্পকালের নিমিত্ত খাটের উপর শয়ন করিয়া চক্ষু বুঝিয়া রহিলেন। ব্যস্ত হইয়া পুনরায় উঠিয়া তিনি বলিলেন, — “ভগবান আমার পাপ ক্ষমা করিবেন? সোনার ইট বাহির করিয়া দিলে তুমি আমার অপরাধ মাৰ্জনা করিবে? তখন আমি শান্তিলাভ করিব? বেশ, রাজাবাবু! তুমি যাহা আজ্ঞা করিবে, আমি তাঁহাই করিব। তবে ঐ অন্ধকার ঘরে গিয়া সোনার ইট বাহির করি।” মাঝের দ্বারের শৃঙ্খল খুলিয়া সোনা-বীে চাের কুঠুরির ভিতর প্রবেশ করিলেন। এই ঘরের বারেণ্ডার দিকের দ্বার তালা-বদ্ধ ছিল। মাঝের দ্বারে সুবালা শৃঙ্খল দিয়াছিলেন। বিনয় সেজন্য এ ঘর হইতে পলায়ন করিতে পারেন নাই। বিনয় ঘরের এককোণে গিয়া লুক্কায়িত হইলেন। সেই কোণে তাঁহার সম্মুখে খাদা ভূত দাঁড়াইয়া রহিল। সোনা-বীে অন্ধকার ঘরে প্রবেশ করিলেন। তাঁহার সঙ্গে বড়ালমহাশয়ও সেই ঘরের ভিতর গমন করিলেন। বিজয়বাবু, পিসীমা, সুবালা, বড়াল-গৃহিণী দ্বারের নিকট মাঝের ঘরে দাঁড়াইয়া রহিলেন । এই অবসরে বড়ালমহাশয়ের হাত টিপিয়া বিনয় বলিলেন,- “আমি বিনয় । খাদা ভূত ও আমি যে এ ঘরে লুক্কায়িত আছি, বিজয়বাবু এখন যেন জানিতে না পারেন। তিনি যদি পুরাপের পরিণাম। sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro Գ6:S