পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৭৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করিতে থাকে। কিন্তু দৈবক্রমে কোন একটা প্রলোভনে পড়িয়া অথবা কোন একটা ঘটনা সীমা পার হইয়া ক্ষিপ্তদশায় উপনীত হয় । খাদা ভূত ও সোনা-বীেয়ের ভাগ্যে ইহাই ঘটিয়াছিল। প্রথম তো ইহারা বিকৃতমস্তিষ্ক লইয়া পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করিয়াছিল। একরূপপ্রকৃতিবিশিষ্ট দুইজন লোক ঘটনাক্রমে একত্র হইল। অতি নিষ্ঠুর কাৰ্য্যে ইহারা প্ৰবৃত্ত হইল। ভাগ্যক্রমে সে চেষ্টা সফল হইল না। নিদ্রিত নিরপরাধ ব্যক্তিকে হত্যা করিতে ইহারা উদ্যত হইয়াছিল। সে লোক একজনের স্বামী, অপর জনের প্রাণরক্ষাকৰ্ত্তা। এই দুকৰ্ম্মের চিন্তা সৰ্ব্বদাই তাঁহাদের মনে জাগরিত ছিল। সুতরাং রাজাবাবুর আকৃতি সৰ্ব্বদা তাহারা মানসচক্ষে প্রত্যক্ষ দেখিত। ইহাদের বয়ঃক্রম যতই অধিক হইতে লাগিল, মস্তিষ্কের বিকারও সেই সঙ্গে বৃদ্ধি হইতে লাগিল। অবশেষে দুইজনেই রীতিমত ক্ষিপ্ত হইল। তবে ক্ষিপ্ততা অনেক প্রকার। সচরাচর যাহাকে পাগল বলে, সোনা-বীে তাঁহাই হইয়াছিলেন। খাদা ভূত বৎসরে একবার পাগল হইত এবং সে সময় অনেক পরিমাণে তাহার জ্ঞান থাকিত । বাল্যকালে আমাদের সহিত একটি বালক স্কুলে পড়িত। কিছুদিন তাহার মুখ হইতে হু হু এইরূপ একটি শব্দ নিৰ্গত হইত। সে তাহা নিবারণ করিতে পারিত না। কিন্তু সে বালক ক্ষিপ্ত হয় নাই। খাদা ভূত যথার্থ পাগল হইয়াছিল। সোনা-বীে ও খাদা ভূত রাজাবাবুর ভূতকে দর্শন করে নাই, তাহাদের বিকারপ্রাপ্ত --বনঃসভূত ছায়া দেখিত মাত্র? তবে এ কথা নিশ্চয় জানিও যে, আমরা সৰ্ব্বদা নানাপ্রকার ভৌতিক জীব দ্বারা পরিবৃত হইয়া আছি।” বিনয় জিজ্ঞাসা করিলেন,— “মৃত্যুকালে য় বলিয়াছিলেন যে, খাদা ভূত নদীতীরে বসিয়া কাদা দিয়া আপনার এবং সোনা-বীে উষর প্রান্তরে বৃক্ষতলে বসিয়া কাঁদিতেছে। পরে শু সত্য সত্যই এইরূপ ঘটনা ঘটিয়াছিল। জ্যোঠামহাশয় কি করিয়া তাহা জানিতে পুষ্ট্রি ל" বিজয়বাবু উত্তর করিলেন,- “ শরীর ও মনের অভ্যন্তরে যাহা আছে, তাহাকে লোকে জীবাত্মা বলে। পৃথিবীতে ইন্দ্ৰিয়ের বশীভূত থাকিয়া কাজ করিতে হয়, সেজন্য তাহার শক্তি অল্প। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তাহাতে অসীম শক্তি নিহিত আছে। কোন কোন মানুষ সেই শক্তি আপনা। আপনি বিকশিত হয়, কোন কোন মানুষ নিয়মানুসারে যত্ন করিয়া সেই শক্তি বিকশিত করে, কোন কোন মানুষের পীড়িত অবস্থায় অথবা মৃত্যুকালে সেই শক্তি কিয়ৎপরিমাণে বিকশিত হয়। এই শক্তি বিকশিত হইলে মানুষের অনেক প্রকার অদ্ভূত ক্ষমতা হয়। অনেক দূরে কোনরূপ শব্দ হইলে কেহ বা তাহা শুনিতে পায়। ইংরাজীতে ইহাকে ক্লোর-অডিয়েন্স (Clairaudience) বলে। অনেক দূরের ঘটনাসমূহ কেহ বা দেখিতে পায়। ইংরাজীতে ইহাকে ক্লেরভয়ান্স (Clair-voyance) বলে। পাপী ও দানববংশসম্বুত, মনুষ্যজাতির অহিতকারী ব্যক্তিদিগের শরীর হইতে যে একপ্রকার কদাকার নীল আভা বাহির হয়, তাহাও কোন কোন ব্যক্তির দৃষ্টিগোচর হয়, তাহাও তাঁহাদের ঘাণেন্দ্ৰিয় দ্বারা অনুভূত হয়। সকল মানুষ সৰ্ব্বদা যে পায়। এইরূপ শক্তিসম্পন্ন লোকের মধ্যে অনেক মহাত্মা আছেন, যাঁহাদের আশীৰ্ব্বাদে লোকের নিশ্চয় মঙ্গল হয়। তাঁহাদের অভিশাপও অতি ভয়ানক। মৃত্যুকালে আমার দাদামহাশয়ের মানসিক বৃত্তিসমূহ কিয়দংশ উত্তেজিত হইয়াছিল, তাহার প্রভাবেই তিনি খাদা ভূতের নাসিকগঠন ও সোনা-বীেয়ের অরণ্যে রোদন দর্শন করিয়াছিলেন।” “እዓ8 দুনিয়ার পাঠক এক হও! ৩ www.amarboi.comৰূির্ডলাক্যনাথ রচনাসংগ্ৰহ