পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৮৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সিদ্ধ হইবার সহজ উপায় সকলের নিকট জানিয়া লইলাম। তাহারা বলিল, গভীর রাত্রিতে শ্মশানে গিয়া মড়ার পিঠে বসিয়া জপ করিতে হয়। বাঘ ভালুক ভূত প্ৰেত আসিয়া ভয় প্রদর্শন করে। ভয় করিলেই বিপদ, না ভয় করিলে দেবী স্বয়ং আসিয়া ব্যর প্রদান করেন। ভূতপ্রেতিদিগের নিমিত্ত সঙ্গে মদ ও মুড়ি-কড়াই-ভাজা লইয়া যাইতে হয়। আমি ভাবিলাম, এ তো সহজ কথা। মড়াকে আবার ভয় কি? মড়া আমি গুলিয়া খাইতে পারি। বাঘকেও আমার ভয় নাই। মন্ত্রবলে আমি বাঘের মুখ বন্ধ করিয়া দিতে পারি। ভূতকেও আমার ভয় নাই। মাছ লইয়া ভূতের সঙ্গে একবার কাড়াকড়ি করিয়াছিলাম। শেষে ভুতের হাতে কামড় মারিয়াছিল। আমার দাঁত নাই, তাই, দাঁত থাকিলে ভূতের হাতে এখনও ঘা থাকিত। তাহার পর একটি ভূত পুধিয়াছিলাম। এলোকেশী যদি সব পণ্ড না করিত, তাহা হইলে পোষা ভূতটি এখনও আমার কাছে থাকিত। দুই চারি দিন পরে সে স্থানে একটি লোক মরিয়া গেল। সে মজুরি করিতে আসিয়াছিল। আপনার লোক কেহ ছিল না। তাহার মৃতদেহ লোকে গাঙ্গে ফেলিয়া দিল। কুন্তীরে খাইতে না খাইতে আমি মড়টিকে টানিয়া উপরে তুলিলাম। তাহার পর যে স্থানে লোক মড়া পোড়ায়, সেই স্থানে রাখিয়া আসিলাম। এক বোতল মদ ও কিছু মুড়ি-কড়াই ভাজা সংগ্ৰহ করিলাম। গভীর রাত্ৰিতে একাকী শ্মশানে গমন করিলাম। মড়াটির মুখে মদ ও মুড়ি-কড়াই ভাজা দিলাম। কুড় কুড় করিয়া খাইতে লাগিল। তাহাকে উপুড় করিয়া পিঠে বসিয়া আমি কঠোর তপ আরম্ভ করিলাম । তোমাদের ওসব জপের মন্ত্র জানি না। হিড়িং বিড়িং আমি মানি না। কেবল দেবীর পাদপদ্ম আমি ধ্যান করিতে প্রথম আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হইল। অবিরত বি ಪ್ರಣೆ ঘন ঘন বজনিনাদে পৃথিবী কম্পিত হইল। আমি উঁ ধ্যান করিতে লাগিলাম । মীর সম্মুখে লক্ষকাম্প করতে লাগিল। শৃঙ্গাঘাতে পৃথিবী চক্ষু মুদিত করিয়া মায়ের পাদপদ্ম ধ্যান করিতে লাগিলাম। ব্যাঘ আসিল। তাহার গভীর গর্জনে বন প্ৰতিধ্বনিত হইতে লাগিল। আমি চক্ষু চাহিলাম না। একমনে দেবীর পাদপদ্ম ধ্যান করিতে লাগিলাম । ভূত প্ৰেত দানা দৈত্য আসিল। আমার সম্মুখে নাচিতে লাগিল। খিলখিল হাসিতে চারিদিক পূর্ণ করিল। আমি ভয় পাইলাম না, চক্ষু চাহিলাম না, কেবল বলিলাম,- “ঐ মদ মুড়িকড়ইভাজা আছে। খাও, খাইয়া ঘরে যাও। তাহার পর পুনরায় ধ্যানে মগ্ন হইলাম।” দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ ডমরুধারের সিদ্ধিলাভ এইরূপ কত যে বিভীষিকা হইল, সে কথা তোমাদিগকে কি আর বলিব। অবশেষে আমার পরলোকগত মাতা আসিলেন। তিনি বলিলেন,- “বাছ, ডমরুধর! অনেক তপ করিয়াছ, আর কাজ নাই, এখন ঘরে চল, এখানে বসিয়া থাকিলে অসুখ করিবে!” আমি কোন উত্তর করিলাম না। ԵrՀԵ află cios (gs se - www.amarboi conf**