পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৮৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমি সম্মুখেই বসিয়াছিলাম। আমার থলিটি সে প্রথম তুলিয়া লইল। পা দুইটি আমি থলির ভিতর গুটািইয়া লইলাম। সব বুনো’, এবার বেঁটা দেখে, এই কথা বলিয়া সে আমাকে গাড়ীর সম্মুখভাগে বসাইয়া দিল। তাহার পর আর পাঁচটি নারিকেলের খলি আনিয়া আমার পশ্চাতে উচ্চভাবেই বসাইয়া দিল । নারিকেল লইয়া বলাই গাড়ী হাঁকাইয়া দিল। বাড়ী যাইতেছে, সেজন্য গরু দ্রুতবেগে চলিতে লাগিল। গ্রাম পার হইয়া মাঠে গিয়া উপস্থিত হইল। গাড়ীর ভিতর বসিয়া থলির ভিতর যে স্থানে আমার চক্ষু দুইটি ছিল, সেই দুইটি স্থানে আঙ্গুল দিয়া আমি অল্প ফাক করিয়া লইলাম। তাহার পর থলির ভিতর হইতে আমি আমার হাত দুইটি বাহির করিতে চেষ্টা করিলাম। এমন সময় আমার মাথা দিয়া বলাইয়ের পিঠে টু লাগিয়া গেল। বলাই আপনাআপনি বলিল,- “সম্মুখে থলিটা নড়িতেছে। এখনি পড়িয়া যাইবে। ভাল করিয়া রাখি।” এই কথা বলিয়া সে গাড়ী থামাইল ও বাম পার্শ্বে নামিয়া পড়িল। সেই অবসরে আমিও দক্ষিণ পাশ দিয়া নামিয়া পড়িলাম। বলাই ভাবিল যে, থলিটা পড়িয়া গেল। গরুর সম্মুখ দিয়া ঘুরিয়া সে আমাকে তুলিতে আসিল। তাহার পর সে যাহা দেখিল, তাহাতে তাহার আত্মা-পুরুষ শুকাইয় গেল। নিশ্চয় সে মনে মনে ভাবিয়ছিল যে, এতকাল নারিকেল বেচিতেছি, নারিকেলপূৰ্ণ বোরার ভিতর হইতে কালো কালো দুইটা পা বাহির হইতে কখনও দেখি নাই। সেই কালো কালো পা দুইটা দিয়া নারিকেলের বোরা যে ছুটিয়া পলায়, তাহাও কখনও দেখি নাই। কিছুকাল সে সেই পা-ওয়ালা বোরার দিকে অবাক চাহিয়া রহিল। তাহার পর “বাপু” এইরূপ শব্দ করিয়ু মাঠের মাঝখানে গাড়ী ফেলিযু থ দিয়া ক্ষেত্রের আলি দিয়া পুনরায় অষ্টাির ভয়ে সোজাপথ দিয়া আসিতে সাহস করে নাই, তখন তাহা আমি জানিতাম নাkঠছে সে আসিয়া আমাকে ধরে, সেজন্য শরীর হইতে বােৱা খুলিবার নিমিত্ত আমি ভুর্কুড় ম না। গুণে আবদ্ধ শরীরেই যথাসাধ্য গুণের ঈষৎ ফাক দিয়া দেখিলাম যে, তাহার দোকান খোলা রহিয়াছে, দোকানে আলো জুলিতেছে। অনেকগুলি লোকের কথাবাৰ্ত্তা আমার কানে প্ৰবেশ করিল। দেখিলাম যে, দোকানের সম্মুখে একখানি খালি পাল্কি রহিয়াছে। এমন সময় একজন মানুষের সহিত আমার ধাক্কা লাগিল। সেও পড়িয়া গেল, আমিও পড়িয়া যাইলাম। তাড়াতাড়ি আমি উঠিয়া দাঁড়াইলাম। সেও উঠিয়া পাছে চীৎকার করে, সেজন্য পথের দক্ষিণ পার্শ্বে একটা বনে গিয়া আমি প্রবেশ করিলাম। বন দিয়া আরও কিছুদূর গিয়া মেনী গোয়ালা-চুড়ীর ঘরের পার্শ্বে গিয়া উপস্থিত হই। শরীর হইতে গুণটা খুলিয়া কোমরে জড়াইলাম। গুণ হইতে একটু সূতা বাহির করিয়া কোমরে বঁধিলাম। এখনও আমার মাথায় সেই সাহেবী টুপি ছিল। তাহার পর হী করিয়া দাঁড়াইয়া চারিদিক আমি দেখিতে লাগিলাম। টুপিট এখন আমি ফেলিয়া দিলাম। তাহার পর দেখিলাম যে, নেকের দোকানের সম্মুখে সে পাব্ধি নাই। কিন্তু সে স্থানে অনেকগুলি লোক একত্র হইয়াছে। তাহারা সকলেই বলাই চিন্তির বিবরণ শুনিতেছে। বলাই বলিতেছে, - “বিন্দু ঠাকুরাণীর নারিকেলের বোরার ভিতর ভূত ছিল। ভূত লইয়া আমি গাড়ীতে করিয়াছিলাম। মাঠের মাঝখানে সে আমার গাড় ভাঙ্গিয়া রক্ত খাইবার উপক্রম করিয়াছিল। অতি কষ্টে আমার প্রাণরক্ষা হইয়াছিল।”

    • ifrits six g3 8.8l www.amarboicom a brò