পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৮৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কি! এলোকেশীর মেজাজটা কড়া বটে, কিন্তু শরীরে অনেক গুণ আছে। মাটিতে পড়িয়া তিনি কাদিতে লাগিলেন । ডমরুধারের বন্ধু আধাকড়ি বলিলেন,— “হা, সেই সময় আমি তোমার বাড়ীতে আসিয়াছিলাম। তোমার সেই অবস্থা দেখিয়া তাড়াতাড়ি আমি বেচু ভূঞাকে ডাকিতে যাইলাম। বেচু ঘরে ছিল না। খুঁজিতে খুজিতে দেখিলাম যে, সে এক পানা-পুকুরের জলে গা ডুবাইয়া বসিয়া আছে। তাহার চক্ষু দুইটি জবাফুলের ন্যায় হইয়াছে। পানা-পুকুরের পচা পাক তুলিয়া মাথায় দিতেছে। আমি বলিলাম,— ‘বেচু! করিয়াছ কি? ডমরুধারকে তুমি কি ঔষধ দিয়ােছ? তোমার ঔষধ খাইয়া ডমরুধর মারা পড়িতে বসিয়াছে।” মাথায় কাদা দিতে দিতে বাজাখাই স্বরে বেচু উত্তর করিল,—‘বড়ি খাইয়া আমিই বা কোন ভাল আছি।” আমি বুঝিলাম যে, সে অবস্থায় তাহাকে আর কোন কথা বলা বৃথা । পুনরায় তােমার বাটীতে আসিয়া মাথায় অনেক জল দিয়া সে যাত্ৰা তোমার প্রাণ আমরা রক্ষা করিলাম।” ডমরুধর বলিলেন, — বেচুর ঔষধ হইতে প্রাণ রক্ষা হইবে বটে, কিন্তু জুর আমার গেল না। পীড়া কঠিন হইয়া উঠিল। তোমরা সকলেই আমাকে দেখিতে আসিতে। তোমরা সকলেই মনে করিয়াছিলে যে, সে যাত্ৰা আমি আর রক্ষা পাইব না। একদিন রাঘব ও নকুল ভট্টাচাৰ্য মহাশয় আমাকে দেখিতে আসিয়াছিলেন। বিছানার দুইপার্শ্বে দুইজনে বসিয়া আমাকে অনেক আশ্বাস ও ভরসা দিতে লাগিলেন । রাঘব বলিলেন, — “দেখুন ভট্টাচাৰ্য মহাশয়, অঙ্গদ শরীরটি ঠিক ডমরুধারের মত ছিল। এইরূপ কাটি আপনি জানিতেন? তাহার চর্বি একটুও ছিল না। তাহার পীড়াটিও রূপ হইয়াছিল। চিতার উপর তাহাকে শোয়াইয়া যখন আমরা আগুন দিলাম, ত আগুনের তাতে তাহার শরীরটি শটুকে উঠিল। ধনুকের মত হইয়া তাহার র উপর উঠিয়া পড়িল। কাঠ সব পুড়িয়া গেল। কিন্তু অঙ্গ পুড়িল না। তাহাকে আমরা জলে ফেলিয়া । কিন্তু আমরা স্নান করিয়া উঠিতে-না-উঠিতে, পাঁচছয়টা কুকুর ও শৃগাল আসিয়া জলে ঝাপঝাঁপি করিয়া তাহাকে খাইয়া ফেলিল। ডমরুবাবু, তোমার শরীরটিও ঠিক সেইরূপ। কিন্তু তোমার ভয় নাই। আমরা অধিক কাঠ দিয়া দেখিব। তবে নিতান্তই যদি তুমি পুড়িয়া না যাও, তাহা হইলে কাজেই তোমাকে আধাপোড়া করিয়া ফেলিয়া দিতে হইবে।” নকুল ভট্টাচাৰ্য আমাকে বলিলেন, — “তোমার পুরোহিতের বাড়ী এ স্থান হইতে দুই ক্রোশ। মন্ত্র পড়াইতে রাত্রিতে যদি আমাকে ঘাটে যাইতে হয়, তাহা হইলে শ্ৰাদ্ধ আমাকে দিয়া করাইতে হইবে। নিজের পুরোহিতকে দিয়া করাইতে পরিবে না। তুমি সে কথা বাড়ীতে বলিয়া রাখ। মৃত্যু হইয়া গেলে আর কথা বলিতে পরিবে না, – মনে কর শেষের সে দিন ভয়ঙ্কর । অন্যে বাক্য কবে কিন্তু তুমি রবে নিরুত্তর।” এলোকেশী পাশের ঘরে বসিয়া এইসব কথা শুনিতেছিলেন। সহসা খেঙরাহন্তে উগ্ৰচণ্ডীর ন্যায় রণমূৰ্ত্তিতে আসিয়া সম্পু করিয়া এক ঘা নকুলের পিঠে বসাইয়া দিলেন। তাহার পর আর এক ঘা রাঘবের মাথায়। ঘর হইতে দুইজনে পলাইলেন। এলোকেশী। তাঁহাদের পশ্চাৎ পশ্চাৎ গিয়া আরও দুই-চারি ঘা বসাইয়া দিলেন। brዩኃ8 fi:Ilă zi, o ga se - www.amarboi conf**