পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৮৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এই দেখ, আজকাল হােমরুল বলিয়া একটা হুজুগ পড়িয়াছে! সেই সম্বন্ধে বক্তৃতা করিতেছেন। ইহা অপেক্ষা আমি শতগুণ বক্তৃতা করিতে পারি। আমার বক্তৃতা লোকে নানারূপ মুখভঙ্গী করিয়া অবাক হইয়া শ্রবণ করে। আমার প্রতি মা সরস্বতীর সামান্য কৃপা নহে। সে বৎসর কাৰ্ত্তিকের ময়ুরে চড়িয়া আমি যখন আকাশভ্রমণে গিয়াছিলাম, তখন মায়ের কৃপায় আমার মুখ দিয়া মহামন্ত্র বাহির হইয়াছিল। এ তোমার হিড়িং বিড়িং মন্ত্র নহে। জিলেট মন্ত্র। আসল বীজমন্ত্র। এ মন্ত্রের যে কি অদ্ভুত শক্তি, এতদিন তাহা আমি জানিতাম না? এইবার জানিতে পারিয়াছি। এই মন্ত্রের প্রভাবে আমি শুক্লাম্বর ঢাককে ঘোর বিপদ হইতে রক্ষা করিয়াছি। প্ৰেতিযোনি-প্ৰাপ্ত তাহার কন্যাকে উদ্ধার করিয়াছি, সমুদ্রযাত্ৰা-জনিত পাপ হইতে তাঁহার জামাতাকে পরিত্রাণ করিয়াছি। লম্বোদর জিজ্ঞাসা করিলেন, — “শুক্লাম্বর ঢাকা-মহাশয়ের কি হইয়াছিল?” দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ ঢাকমহাশয় ডমরুধর বললেন,- শুক্লাম্বর ঢাকমহাশয় গুরুগিৰ্জিরিয়া তাঁহার বিলক্ষণ দুপিয়সা উপাৰ্জ্জন হয়। দােতলা কোঠা বাড়ীতে তিনি বাস কুৱেন্তর্গ মােকদ্দমা-মামলা সম্বন্ধে তাঁহার যেরূপ বুৎপত্তি, এরূপ বুৎপত্তি প্ৰায় দেখিতে খ্রীয় না। নানা বিষয়ে ঢাকমহাশয় আমার সহায়তা করেন। তিনি আমার পরম বন্ধু। ত নিষ্ঠাবান পুরুষ। পূজা-আহ্নিক জপ-তপে তিনি অনেক সময় অতিবাহিত করেন। সেজন্য তাঁহার প্রতি আমার অগাধ ভক্তি। আজকাল ব্ৰাহ্মণের ত্রিসন্ধ্যা করে না। টিকিনাড়ারা সে উপদেশ কাহাকেও প্ৰদান করে না। কিন্তু ঢাকমহাশয় সে প্রকৃতির লোক নহেন। কাহাকেও চা বা বরফ খাইতে দেখিলে তিনি আগুনের ন্যায় জুলিয়া উঠেন। সন্ধ্যা-আহ্নিকে যাহাতে লোকের প্রবৃত্তি হয়, সে বিষয়ে তিনি চেষ্টা করেন। গত বৈশাখ মাসে একদিন ঢাকমহাশয় আমাকে ডাকিতে পাঠাইলেন। সূৰ্য অগ্নিবৃষ্টি করিতেছেন। রৌদ্রে পৃথিবী পুড়িয়া যাইতেছে। আমি তাঁহার বাড়ী গমন করিলাম। ঘোর পিপাসায় কাতর হইয়া আমি কোৎ কেঁৎ করিয়া একঘটি জল খাইয়া ফেলিলাম। কিঞ্চিৎ সুস্থ হইলে ঢাকমহাশয় আমাকে বলিলেন যে, তাঁহার কন্যা কুন্তলার প্রখর জুর হইয়াছে। কুন্তলার বয়স নয়। বৎসর। আট বৎসর বয়সে ঢাকমহাশয় তাহার বিবাহ দিয়াছিলেন। বিবাহের দুই মাস পরেই সে বিধবা হইয়াছিল, ঢাকমহাশয়ের সহিত আমি সেই ঘরে গমন করিলাম। জুরে কুন্তলার কাঠ ফাটিতেছে। আগুনের ন্যায় শরীরের উত্তাপ হইয়াছে। ক্রমাগত এ-পাশ ও-পাশ করিতেছে। মা একটু জল দাও, মা একটু জল দাও, ক্রমাগত এই কথা বলিতেছে। মা! পিপাসায় আমার বুক ফাটিয়া যাইতেছে। একটু জল দাও মা! একটুখানি দাও। কেবল মুখটি ভিজাইয়া দাও। একটু জল না খাইয়া আর থাকিতে পারি না। জল, জল, জল । বিরাস বদনে মা নিকটে বসিয়া আছেন। মাঝে মাঝে বাতাস করিতেছেন। মাঝে মাঝে চক্ষুর জল মুছিতেছেন। "f frig citya gas xel www.amarboicom a br\UsS»