পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৮৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এই কথা বলিয়া কেশব আপনার গৃহে চলিয়া গেলেন। এ স্থানে ঢাকমহাশয়ের বাড়ীতে কান্নাকাটি পড়িয়া গেল। কালিকা কাঁদিতে লাগিলেন, সকলেই কাঁদিতে লাগিল। ঢাকমহাশয় হাঁ করিয়া দেখাইলেন যে, তাহার মুখ শুষ্ক হইয়া গিয়াছে। আমি একহাড়ী ভাতের ফোন আনিয়া তাহার সম্মুখে ধরিলাম। ঢাকমহাশয় চো চো করিয়া তাহা খাইয়া ফেলিলেন। তাহা খাইয়া তাহার শরীর কিঞ্চিৎ সুস্থ হইল। আমরা তাঁহাকে ঘরের ভিতর লইয়া যাইতে চেষ্টা করিলাম। কিন্তু তিনি পৈঠা উঠিতে সম্মত হইলেন না। অগত্যা তাঁহাকে গোয়ালে লইয়া যাইতে হইল। তাহার মুখের ভঙ্গী দেখিয়া আমি বুঝিলাম যে, তিনি আর সকলকে চলিয়া যাইতে বলিতেছেন। তাহার চক্ষু দিয়া দর দর ধারায় অশ্রষ্টপাত হইতে লাগিল। আমি তাঁহাকে আশ্বাস দিয়া বলিলাম,- “কিছু ভয় নাই, শীঘই পুনরায় আপনি মনুষ্য-শরীর পাইবেন। আর যতদিন না। পুনরায় আপনার মনুষ্যশরীর হয়, ততদিন আপনাকে আমি ছাড়িয়া যাইব না।” রাত্রি নয়টার সময় আমি নিজহাতে খড় কাটিয়া তাহাকে জাব দিলাম। তাহার পর গোয়ালের দেল ঠেস দিয়া বসিয়া আমি ক্রমাগত মা দুৰ্গাকে ডাকিতে লাগিলাম। আমি বলিলাম যে,- “মা! তুমি আমাকে নানা বিপদ হইতে রক্ষা করিয়াছ। আমার বন্ধুকে তুমি এ বিপদ হইতে রক্ষা কর। ইনি পূজা করিবেন না বলিয়াছেন। কিন্তু মা! ভাবিও না; যাহাতে ইনি এ বৎসর ঘটা করিয়া তোমার পূজা করেন, আমি সে ব্যবস্থা করিব।” తో মা দয়াময়ী। মা আমার কান্না শুনিলেন। রাত্রি তিনটার সময় গোয়ালে অন্ধকারে বসিয়া আমি একটু চক্ষু বুজিয়াছি, এমন সময় মা আমাকে দর্শন দিলেন। মা বলিলেন,— “ডমরুধর! তুমি আমার বরপুত্র, কিছু ভয় নাই, সরস্বতীর কৃপায় তোমার মুখ হইতে জিলেট মন্ত্র বাহির হইয়াছিল, সেই মহামন্ত্রের প্রভাবে তুমি ঢাকের পশুত্ব মোচন কর । কুন্তলাকে উদ্ধার কর, কেশবকে সমুদ্রযাত্ৰাজনিত পাপ হইতে মুক্ত কর। সমুদ্রযাত্ৰা তো সামান্য কথা। জিলেট মন্ত্র-প্রভাবে মানুষের সকল পাপ দূর হয়। এই মহামন্ত্রের মহিমা অপাের। জিলেট জিলেকি সিলেমেল কিলোকিট কিলোকিশ ।” এইরূপ উপদেশ দিয়া মা অন্তৰ্দ্ধান হইলেন। প্ৰাতঃকালে উঠিয়া আমি প্ৰথমে স্নান করিলাম, শুচি হইয়া গোয়ালে প্ৰবেশ করিয়া একচক্ষুহীন দামড়া গরুর অর্থাৎ ঢাকমহাশয়ের গায়ে হাত বুলাইয়া আমি জিলেট মন্ত্র পাঠ করিতে লাগিলাম। জিলেট জিলেকি সিলেমেল কিলোকিট কিলোকিশ,—সাতবার এই মহামন্ত্র পাঠ করিতেই ঢাকমহাশয়ের দামড়া রূপ ঘুচিয়া পুনরায় মনুষ্যরূপ হইল। তাহার পর জিলেট মন্ত্র উচ্চারণ করিতে করিতে আমি ঢাকমহাশয়ের বাড়ী তিনবার প্রদক্ষিণ করিলাম। তৎক্ষণাৎ আকাশ হইতে পুষ্পক রথ নামিয়া আসিল । সেই রথে চড়িয়া কুন্তলা স্বর্গে গমন করিলেন। জিলেট মন্ত্রের এমনি প্রভাব। জিলেট জিলেকি সিলেমেল কিলেকিট কিলোকিশ । "°ʼ”*-Pf°° gfqRiigi ~ii%35 (q35 zR8! ~ www.amarboi.com ~ ኩr “እና