পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করার সময় সমস্যা ছিল।

না লইলে, নাকেশ্বরী কাহাকেও কিছু বলে না, বলিতেও পারে না। যাহা হউক, একবৎসর পরে ধন ছাড়িয়া নাকেশ্বরী আপনার শ্বশুরালয়ে চলিয়া যাইবে। ঘ্যাঁঘোঁ ভূতের সহিত যখন তাহার বিবাহের কথা হয়, তখন লোকে কত না ভাঙচি দিয়াছিল!”

 আমি জিজ্ঞাসা করিলাম,— “ভাঙচি কেন দিয়াছিল, মহাশয়?”

 স্কল বলিলেন,— “তুমি জান না, তাই পাগলের মত কথা জিজ্ঞাসা কর। বিবাহে ভাঙচি দিলে যেমন আমোদটি হয়, এমন আমোদ আর কিছুতে হয় না। তুমি একটি পাত্র কি পাত্রী স্থির করিয়া বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজনের মত জিজ্ঞাসা কর; তাঁরা বলিবেন, — ‘দিবে দাও! কিন্তু—'। ঐ যে 'কিন্তু' কথাটি, উহার ভিতর একজাহাজ মানে থাকে। যাহা হউক, যাহা বলি আর যা কই, ঘ্যাঁঘ্যোঁর বিবাহে অতি চমৎকার ভাঙচি দিয়াছিল। প্রশংসা করিতে হয়!”

 আমি জিজ্ঞাসা করিলাম,— “ভাঙচি আবার চমৎকার কি, মহাশয়?”

 স্কল উত্তর করিলেন,— “সাতকাণ্ড,— সেই যা আমাদের নাম করিতে নাই,— তা পড়িয়া থাকিবে, কিন্তু ভূতের কাণ্ড তুমি কিছুই জান না। কি হারিয়াছিল বলিতেছি,—শুন! ঘ্যাঁঘোঁর সহিত বিবাহের কথা উপস্থিত হইলে, নাকেশ্বরীর মাসী পাত্র দেখিতে একটি ভূত পাঠাইয়া দিলেন। ঘ্যাঁঘোঁর বাটীতে সেই ভূত উপস্থিত হইলে, ঘ্যাঁঘোর তাঁহার বিশেষ সমাদর করিলেন। আহারাদি প্রস্তুত হইলে, তিনি নিকটস্থ একটি বিলের জলে স্নান করিতে যাইলেন। সেইখানে প্রতিবেশী ভূতগণও পরামর্শ করিয়া স্নান করিতে যাইলেন। তাঁহাদের মধ্যে একজন আগন্তুক

কঙ্কাবতী
৮৩