পাতা:দম্পতি - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দলপতি বাগানটা বেশ বড়। বোনেন্দী বহুকালের পুরানো প্রমোদ-কানন। মাঝখানে যে বাড়ী আছে--সেটা দোতলা । অনেকগুলি ঘর ওপরে নীচে, মেঝে মার্নেল পাথরে বাধানো । দেওয়ালে বিবর্ণপ্ৰায় বড়-বড় অয়েলপেন্টিং-অধিকাংশই নগ্ন নারী-মূৰ্ত্তির ছবি। উনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে কোনো বিলাসী ধনী ব্যক্তি সখা করিয়া বাগান-বাড়ী করাইয়া থাকিবেন । সে অতীত ঐশ্বৰ্য্য ও সৌখীনতার চিহ্ন এর প্রতি ইষ্টকখণ্ডে। বাগান-বাড়ীর একটা ঘর তালাবন্ধ। তার মধ্যে অনেক পুরানো বাসনপত্র, ঝাড়, কার্পেট, কোঁচ, কেদারা, আয়না প্রভৃতি গাদা করা। প্ৰবাদ এই, সেই ঘরে মাঝে-মাঝে, উনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগের ৬/আনন্দনারায়ণ ঘোষকে চোগাচাপিকান ও শামলা পরিয়া একতাড়া কাগজ হাতে ঘুরিতে-ফিরিতে দেখা গিয়াছে। সেকালের বিখ্যাত এটর্নি আনন্দনারায়ণ ঘোষের নাম এখনও অনেকে জানেন । পুকুর-ধারে শচীন বসিয়াছিল-পাশে গদাধর এবং রেখা বলিয়া একটি মেয়ে। রেখা বলিতেছিল-আমাদের স্টডিওতে আপনি রোজ বলেন যাবে,--যাবে-কৈ, একদিনও গেলেন না তো ! গদাধর হঠাৎ জড়িত স্বরে বলিলেন- আড়ত থেকে বেরেই আর তোমাদের স্টুডিও বন্ধ হয়ে যায়—যাই কখন বলো, রেখা ? --না, আমার পার্টটা না দেখলে আপনি আমায় নেবেন কি ক’রে ? --আৱে, তোমায় এমনিই নিয়ে নেবো, পার্ট দেখতে হবে না । চমৎকার চেহারা তোমার, তোমায় বাদ দিলে কি ক’রে হবে ? or