পাতা:দম্পতি - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দম্পতি শচীন বাজাইতে পারে, গদাধর আগেই জানিতেন-সখের যাত্রার দলে বাঁশি বাজাইয়া বেড়াইয়া লেখাপড়া শিখিল না, কখনো বিষয়আশয় দেখাশুনা করিল না । সে যে কলিকাতায় আসিয়া এত-বড় ‘বাজিয়ে’ হইয়া উঠিয়াছে, ফিল্ম তোলার স্টুডিওতে চাকরি করেএত খবর তিনি রাখিতেন না ! শুনিয়া একটু আশ্চৰ্য্য হইলেন। চা পান শেষ হইলে গদাধর দু'এক কথার পর পুনরায় চেক-বই বাহির করিলেন। একটু ইতস্ততঃ করিয়া বলিলেন-তাহ’লে ক্রস চেক্‌ দেবো কি ? আপনার পুরো নামটা -ও ! চেকখানা ? ও আর আপনাকে দিতে হবে না। গদাধর এমন বিস্মিত হইলেন যে, তঁহার মনে হইল, তিনি কথার অর্থ ঠিক বুঝিতেছেন না। শোভার মুখের দিকে চাহিয়া পুনরায় বলিলেন-মা, মানে আমি বলচি, আপনার নামটা চেকে লিখে ক্রস্ ক’রে দেবো কি না ? শোভা এবার বেশ ভালো ভাবেই হাসিল । মৃদুহাসি নয়, সত্যিকার আমোদ আর কৌতুকের হাসি। গদাধর মুগ্ধ হইয়া গেলেন সেই অতি অল্প দু’এক সেকেণ্ডের মধ্যেই ! হাসিলে যে সব মেয়ে যথার্থ সুন্দরী, তাহদের চোখে-মুখে কি সৌন্দৰ্য্য ও মোহ ফুটিয়া উঠেগদাধর পাটের বস্তা ওজন করিয়া মোকামে মোকামে ঘুরিয়া কাল কাটাইয়াছেন। এতদিন-কখনও দেখেন নাই ! হাসিতে-হাসিতে শোভা বলিল-আপনি ভারি মজার লোকবেশ লাগে আপনাকে-শুনতে পেলেন না, কি বলচি ? ও চেক দিতে হবে না। আপনাকে । s