তাহলেও শরীর সারেনি।--বেশ দেখতে পাচ্ছি। একবার ঘুরে এলে আর যাই হোক -মন্দ কিছু তা হবে না। নরেন্দ্ৰ ভিতরে-বাহিরে এমন জায়গায় উপস্থিত হইয়াছিল, যেখানে সহ্য করিবার ক্ষমতা নিঃশেষ হইয়া গিয়াছিল। তবুও ধাক্কা সামলাইয়া বলিল, আমার ঘুরে বেড়াবার সামর্থ্য নেই। ইন্দু জিদ করিয়া বলিল, সে হবে না। প্ৰাণটা ত বঁাচানো চাই । এই জিদটা ইন্দুর পক্ষে এতই নূতন যে, নরেন্দ্র সম্পূর্ণ ভুল করিল। তাহার নিশ্চয়ই মনে হইল, তাহাকে ক্লেশ দিবার ইহা একটা অভিনব কৌশল মাত্র। এতদিনের ধৈৰ্যোর বঁাধন তাহার নিমেষে ছিন্ন হইয়া গেল। চেঁচাইয়া উঠিল, কে বললে প্ৰাণ বাচানো চাই ? না, চাই না । তোমার পায়ে পড়ি ইন্দু, আমাকে রেহাই দাও, আমি নিঃশ্বাস ফেলে বঁচি । স্বামীর কাছে কটু কথা শোনা ইন্দু কল্পনা করিতেও পারিত না । সে কেমন যেন জড়সড় হতবুদ্ধি হইয়া গেল। কিন্তু নরেন্দ্ৰ জানিতে পারিল না ; বলিতে লাগিল, তুমি ঠিক জানো, আমি কি সঙ্কটের মাঝখানে দিন কাটাচ্ছি। সমস্ত জেনে-শুিনেও আমাকে কেবল কষ্ট দেবার জন্যেই অহৰ্নিশি খোচাচ্চ। কেন, কি করেচি তোমার ? কি চা ও তুমি ? ইন্দু ভয়ে বিবৰ্ণ হইয়া রহিল ; একটা কথাও তাহার মুখ দিয়া কাহির হইল না । চেঁচামোচ উত্তেজনা নরেন্দ্রের পক্ষে যে কিরূপ অস্বাভাবিক, তাহা এইবার সে নিজেই টের পাইল । কণ্ঠস্বর নত করিয়া বলিল, বেশ, স্বীকার করলুম। আমার হাওয়া বদলানো আবশ্যক, কিন্তু কি করে যাব ? কোথায় টাকা পাব ? সংসারা-খরচ যোগাতেই যে আমার প্রাণ বার ॐ यbट । ইন্দু নিজে কোনও দিন ধৈৰ্য শিক্ষা করে নাই ; অবনত হইতে তাহার মাথা কাটা যাইত। আজ কিন্তু সে ভয় পাইয়াছিল। নম্র-কণ্ঠে কহিল, টাকা নেই বটে, কিন্তু অনেক টাকার গয়না ত আমাদের আছে e
পাতা:দর্পচূর্ণ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩০
অবয়ব