দেখো, সেগুলো পেতল নয় । ভগিনীর মুখের পানে চাহিয়া হারটা দেখাইয়া কহিল, এটা সোনা নয় বোন, পেতলাই বটে। যে দুঃখে বাপ হয়ে ঐ একটি মেয়ের জন্মদিনে তাকে ঠকিয়েছি, সে তুই বুঝবি। তবুও মেয়েকে ঠকাতে পেরেচি, কিন্তু নিজের স্ত্রীকে ঠকাতে সাহস করিনি । g কথা শোন বেী, একবার পায়ে হাত দিয়ে তঁর কাছে ক্ষমা চাও গে ; কেন, কি দুঃখে ? আমার মাথা কেটে ফেললেও আমি তা পারব। না ঠাকুরঝি। কেন পারবে না ? স্বামীর পায়ে হাত দিতে লজা কি ? বেশ ত তোমার দোষ না হয় নেই, কিন্তু তাকে প্ৰসন্ন করা যে সকল কাজের বড় { না-আমার তা নয়। ভগবানের কাছে খাটি থাকাই আমার সকল কাজের বড়। যতক্ষণ সে অপরাধ না করচি, ততক্ষণ আর কিছুই ভয় করি নে । বিমলা রাগিয়া বলিল, বৌ, এ সব পাকামির কথা আমরাও জানি তখন কিছুই কোন কাজে আসবে না বলে দিচ্চি। চােখ বুজে বিপদ এড়ানো যায় না । দাদা সত্যই তোমার ওপর বিরক্ত হয়ে উঠছেন। ইন্দু উদাসভাবে বলিল, তার ইচ্ছে ! বিমলা মনে মনে অত্যন্ত জ্বলিয়া উঠিয়া বলিল, সেই ইচ্ছে টের পাবে, যেদিন সর্বনাশ হবে। দাদা। যেমন নিরীহ, তেমনি কঠিন। তঁার এ-দিক দেখোঁচ, ও-দিক দেখতে এখনো বাকী আছে-তো বলে দিচ্চি। আচ্ছা, দেখতে পেলে তোমাকে খবর দিয়ে আসব। বিমলা আর কিছু বলিল না। খানিকক্ষণ চুপ করিয়া থাকিয়া, একটা নিশ্বাস ফেলিয়া ধীরে ধীরে বলিল, তা সত্য । বিশ্বাস হয় না। বটে, স্বামীর মেহে বঞ্চিত হবে । কিন্তু সে মানুষ যে দাদা নয়অসুখের সময় তঁাকে ভাল করে চিনেচি। বুকের কপাট তার একবার বন্ধ হয়ে গেলে আর খোলা যাবে না । లిన
পাতা:দর্পচূর্ণ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩২
অবয়ব