উপস্থিত হইল। তাহার মৃদু পদশব্দ বিমলা যে শুনিয়াও শুনিল না, তাহা সে বুঝিল! গাড়িতে উঠিয়া বসিলে বুখ বাড়াইয়া চিরদিন এই দুটি সখী পরস্পরকে নিমন্ত্রণ করিয়া, হাসিয়া কপাট বন্ধ করে। আজ গাড়িতে ঢুকিয়াই বিমলা দরজা টানিয়া দিল । ঘরে ফিরিয়া আসিয়া ইন্দু কমলাকে বুকের কাছে টানিয়া লইয়া শুইয়া পড়িল । বিমলা চলিয়া গেল, কিন্তু তাহার খরতপ্ত কথাগুলো রাখিয়া গেল । ইহার উত্তাপ যে কত, এইবার ইন্দু টের পাইল। এই তাপে তাহার অহঙ্কারের অভ্ৰভেদী তুষারভৃপ যতই গলিয়া বহিয়া যাইতে লাগিল, ততই এক-একটি নূতন বস্তু তাহার চোখে পড়িতে লাগিল। এত কাদামাটি-আবর্জন-এত কর্কশ-কঠিন শিলাখণ্ড যে এই ঘনীভূত জলতলে আবৃত হইয়া ছিল, তাহা সে স্বপ্নেও ভাবে নাই । হঠাৎ তাহার অন্তরের ভিতর হইতে কে যেন জিজ্ঞাসা করিয়া বলিল, এ কেমন হয় ইন্দু, যদি তিনি মনে মনে তোমাকে ত্যাগ করেন ? তুমি কাছে গিয়ে বসলেও যদি তিনি ঘৃণায় সরে বসেন ? তাহার সর্বাঙ্গ কাটা দিয়া উঠিল । कभला कश्छि, कि भा ? ইন্দু তাহাকে সজোরে বুকে চাপিয়া ধরিয়া, তাহার মুখে চুমা খাইয়। বলিল, তোর পিসীমা এত ভয় দেখাতেও পারে। কিসের ভয় মা ? ইন্দু আর একটি চুমা খাইয়া বলিল, কিছু না মা, সব মিথ্যে- সব মিথ্যে ! যা তো মা, দেখে আয় তোর বাবা কি কচোন ? মেয়ে ছুটিয়া গেল। আজ দু’জন স্বামী-স্ত্রীতে একটা কথাও হয় নাই! কমলা ফিরিয়া আসিয়া বলিল, বাবা চুপ করে শুয়ে আছেন। চুপ করে ? আচ্ছা, তুই শুয়ে থাক মা, আমি দেখে আসি, বলিয়া ইন্দু নিজে চলিয়া গেল। পর্দার ফাক দিয়া দেখিল, তাই বটে ! তিনি উপরের দিকে চাহিয়া সোফায় শুইয়া আছেন। মিনিট পাচি 98
পাতা:দর্পচূর্ণ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৪
অবয়ব