পাতা:দর্পচূর্ণ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ইন্দু চলিয়া যাইতেছিল, হঠাৎ একটা গভীর নিশ্বাস কানে যাইতেই সে ফিরিয়া দাড়াইয়া বলিল, আচ্ছা, আমি কিছু একটা করতে চাইলেই তুমি অমন করে দীর্ঘনিশ্বাস ফেল কেন, বল ত ? এতই যদি তোমার দুঃখের জ্বালা, মুখ ফুটে বল না কেন, আমি বাবাকে চিঠি লিখে যা হোক একটা উপায় করি । নরেন্দ্র মুহুর্তকাল মুখ তুলিয়া ইন্দুর দিকে চাহিয়া রহিল। মনে হইল যেন সে কিছু বলিবে। কিন্তু কিছুই বলিল না, নীরবে মুখ নত করিলা । নরোন্দ্রের মামাত ভগিনী বিমলা ইন্দুর সখী । ও-রাস্তার মোড়ের উপরেই তাহার বাড়ি। ইন্দু গাড়ি দাড় করাইয়া, ভিত্তরে প্রবেশ করিয়াই বিস্মিত ও বিরক্ত হইয়া কহিল, ও কি ঠাকুরঝি ! কাপড় পরনি যে ! খবর পাওনি নাকি ? বিমলা সলজ্জ হ্যাতিমুখে বলিল, পেয়েচি বই কি, কিন্তু একটু দেরি হবে ভাই। উনি এইমাত্র একটুখানি বেড়াতে বেরুলেন-ফিরে না এলে ত যেতে পারব না । ইন্দু মনে মনে অত্যন্ত বিরক্ত হইল। একটা খোচা দিয়া প্ৰশ্ন করিল, প্রভুর হুকুম পাওনি বুঝি ? বিমলার সুন্দর মুখখানি স্নিগ্ধ মধুর হাসিতে ভরিয়া গেল। এই খোচাটুকু সে যেন ভারী উপভোগ করিল। কহিল, না, দাসীর আজ্জি এখনও পেশ করা হয়নি, হলে যে না-মঞ্জুর হবে না, সে ভরসা করি । ইন্দু আরও বিরক্ত হইল। প্রশ্ন করিল, তবে পেশ হয়নি কেন ? খবর ত তোমাকে আমি বেলা থাকতেই পাঠিয়েছিলুম। তখন সাহসী হ’লো না বেী । অফিস থেকে এসেই বললেন, মাথা ধরেচে। ভাবলুম, জলটল খেয়ে একটু ঘুরে আসুন, মনটা প্ৰফুল্ল হোক --তখন জানাব ! এখনও ত দেরি আছে, একটু ব’সো না ভাই, তিনি ফিরে এলেন বলে । কি জানি কিসে তোমার হাসি আসে ঠাকুরঝি ! আমি এমন হলে S