আলো ও ছায়৷ প্ৰথমেই যদি তোমরা ধরিয়া ব’স, এমন কখখনো হয় না, তবে ত আমি নাচার। আর যদি বল হইতেও পারে-জগতে কত কি যে ঘটে, সবই কি জানি ? তা হলে এ কাহিনী পড়িয়া ফেল ; আমার বিশ্বাস, তাহাতে কোন মারাত্মক ক্ষতি হইবে না । আর গল্প লিখিতে এমন কিছু প্ৰতিজ্ঞা করিয়া বসা হয় না যে, সবটুকু খাঁটি সত্য বলিতে হইবে । হ’লই বা দু-এক ছত্ৰ ভুল, হ’লই বা একটু-আধটু মতভেদ - এমনই বা তাহাতে কি আসে যায় ? তা নায়কের নাম হইল যজ্ঞদত্ত মুখুজ্যে –কিন্তু সুরমা বলে আলোমশাই । নায়িকার নাম ত শুনিলে, কিন্তু যজ্ঞদও তাকে বলে ছায়াদেবী । দিন-কতক তাহদের ভারী কলহ বাধিয়া গেল, কে যে আলো – কে যে ছায়া, কিছুতেই মীমাংসা হয় না ; শেষে সুরমা বুঝাইয়া দিল, এটা তোমার সূক্ষ্মবুদ্ধিতে আসে না যে, তুমি না থাকিলে আমি কোথাও নাই – কিন্তু আমি না থাকিলে তুমি চিরজীবি ; তাই তুমি আলো, আমি ছায়া । যজ্ঞদত্ত হাসিল, এক তরফ ডিগ্ৰী পেতে চাও করা, কিন্তু বিচারটা কোন কাজের হ’ল না । সুরমা । খুব হয়েছে, বেশ হয়েছে, চমৎকার হয়েছে আলোমশাই, আর ঝগড়া করতে হবে না। তুমি আলোমশাই, আমি শ্ৰীমতী ছায়াদেবী । বলিতে বলিতে ছায়াদেবী নানারীপে অ্যালোমশাইকে ব্যস্ত করিয়া তুলিল । গল্পের এতটুকু তা হ’ল। কিন্তু এইবার তোমাদের সঙ্গেই দ্বন্দ্বযুদ্ধ না বাধিয়া গেলে বাচি । তুমি কহিবে, ইহারা স্ত্রী-পুরুষ ; আমি কহিব, স্ত্রী-পুরুষ বটে, কিন্তু স্বামী-স্ত্রী নয়। নিশ্চয় তুমি চােখ রাঙ্গাইবে, তবে কি অবৈধ প্ৰণয় ? আমি বলিব, খুব শুদ্ধ ভালবাসা । কিছুতেই তোমরা তাহা বিশ্বাস করিবে না, মুখ ভার করিয়া জিজ্ঞাসা করিবে, 3లి
পাতা:দর্পচূর্ণ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪৩
অবয়ব