যজ্ঞ। সুরে, তুমি একটি বিয়ে কর না কেন ? সুরমা । যজ্ঞদত্তের হাত হইতে পত্ৰখানি কাড়িয়া লইয়া কহিল ছি, বিধবার কি বিয়ে হয় ? যজ্ঞদত্ত। খানিকক্ষণ চুপ করিয়া থাকিয়া কহিল, কে জানে ? কেউ বলে হয়, কেউ বলে হয় না। সুরমা । তবে আমাকে এ নিমিত্তের ভাগী করবার চেষ্টা কেন ? যজ্ঞদত্ত দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলিয়া কহিল, তবে কি চিরকাল শুধু আমারই সেবা করে কাটাবে ? হু, বলিয়া সে ঝরঝর করিয়া কঁাদিয়া ফেলিল । যজ্ঞদত্ত অশ্রু মুছাইয়া দিয়া কহিল, সুরে, কি তোমার মনের সাধ, আমাকে খুলে বলবে না ? 受 সুরমা । আমাকে বৃন্দাবনে পাঠিয়ে দাও । যজ্ঞ । আমাকে ছেড়ে থাকতে পারবে ? সুরমার মুখ দিয়া কথা বাহির হইল না-দক্ষিণে ও বামে বার-দুই মাথা নাড়িতে গিয়া চোখের জল উৎসের মত ছুটিয়া বাহির হইয়া १gिल। দুই সুরমা । যজ্ঞদাদা, সেই গল্পটা আবার বল না। যজ্ঞ । কোনটা সুরো ? সুরমা । সেই যে আমাকে যাবে বৃন্দাবনে কিনেছিলে । কত টাকায় কিনেছিলে গো ? যজ্ঞ । পঞ্চাশ টাকায়। আমার তখন আঠার বছর বয়স। বি. এ. একজামিন দিয়ে পশ্চিমে বেড়াতে যাই। মা তখন বেঁচে, তিনিও সঙ্গে ছিলেন। একদিন দুপুরবেলায় মালতী-কুঞ্জের ধারে একদল বৈষ্ণবী গান গাইতে আসে, তারই মধ্যে প্ৰথম তোমাকে দেখতে পাই । যৌবনের প্রথম ধাপটিতে পা দিয়ে জগৎটাকে এমন সুশ্ৰী দেখতে হয়, 3G
পাতা:দর্পচূর্ণ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪৫
অবয়ব