লজ্জায় মরে যৌতুম। আচ্ছা, ঝিকে কিংবা বেহােরাটিকে বলে কি ষেতে 어 ? বিমলা সািভয়ে বলিল, বাপ রে! তা হলে বাড়ি থেকে দূর করে দেবেন-এ জন্মে আর মুখ দেখবেন না । ইন্দু ক্ৰোধে বিস্ময়ে অবাক হইয়। কহিল, দূর করে দেবেন ! কোন আইনে ? কোন অধিকারে শুনি ? বিমলা নিতান্ত সহজভাবে জপাব দিল, বাধা কি বেী । তিনি মালিক -আমি দাসী বই ত নয়। তিনি তাড়ালে, কে তঁাকে ঠেকাবে বল ! ঠেকাবে রাজা। টেকাবে আইন। সে চুলোয় যাক গৈ ঠাকুর ঝি, কিন্তু নিজের মুখে নিজেকে দাসী বলে কবুল করতে কি একটু লজ্জা, হয় না ? স্বামী কি মোগল বাদশা ? অার স্ত্রী কি তঁর ক্রীতদাসী যে, আপনাকে আপনি এমন হীন, এমন তুচ্ছ করে গৌরব বোধ করািচ ? এই ক্ৰোধান্টুকু লক্ষ্য করিয়া বিমলা আমোদ বোধ করিল, কহিল, তোমার ঠাকুরঝি যে মুখ্য মেয়েমানুষ বীে, তাই নিজেকে স্বামীর দাসী বলে গৌরব বোধ করে । আচ্ছা, জিজ্ঞাসা করি ভাই, তুমি যে এত কথা বলছি, তুমিই কি বাড়ি থেকে বেরিয়েচ দাদার হুকুম না নিয়ে ? হুকুম ? কেন, কি জন্যে ? তিনি নিজে যখন কোথাও যানআমার হুকুমের অপেক্ষা করেন কি ? আমি যাচ্ছি, শুধু এই কথা তাকে জানিয়ে এসেচি। নিমেষমাত্র মৌন থাকিয়া, অকস্মাৎ উদ্দীপ্ত হইয়া কহিল, তবে একথা মানি যে, আমার মত গুণের স্বামী খুব কম মেয়েমানুষের ভাগ্যে জোটে । অামার কোন ইচ্ছাতেই তিনি বাধা দেন না । কিন্তু, এমন যদি না-ও হ’তো, তিনি যদি নিতান্তই অবিবেচক হতেন, তা হলেও তোমাকে বলচি ঠাকুর ঝি, আমি নিজের সম্মান ষোলআনা বজায় রাখতে পারতুম ; কিছুতেই তোমাদের মত এ-কথা ভুলতে পার তুম না যে, আমি সঙ্গিনী, সহধর্মিণী-ৰ্তার ক্রীতদাসী নই। জানে। ঠাকুরবি, এমনি করেই আমাদের দেশের সমস্ত মেয়েমানুষ পুরুষের পায়ে মাথা মুড়িয়ে এত তুচ্ছ, এমন খেলার পুতুল হয়ে দাড়িয়েচে । নিজের
পাতা:দর্পচূর্ণ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫
অবয়ব