পাতা:দর্পণ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জামাটা টেনে নিয়ে গায়ে দিতে দিতে আবার বলে, ‘ঘুরে আসি ; একটু।” “আমিও যাব চলে । বড় বিশ্ৰী লাগছে।” “না, না । একটা দরকার আছে আমার ।” প্ৰায় আৰ্ত্তনাদের মত শোনায় হীরেনের কথা। প্ৰায় সে ছিটকে পালিয়ে যায়। ঘর থেকে । শুধু ঘর থেকে নয়, মমতার নাগালের সীমা থেকেও যেন চিরদিনের জন্য । মমতাকে ঘিরে উপগ্রহের মত পাক খাওয়াই ছিল যেন তার জীবনের গতি, মাধ্যাকর্ষণের মত অদৃশ্য বাধনটা ছিড়ে যাওয়ায় ছিটকে সরে যাচ্ছে দূর থেকে দূরে। কোথায় সে থাকে কি সে করে মমতা জানতে পারে না । কথা সে কয় ভাসা ভাসা, অল্প দু’চারটে কথা । কাজ করার ছুতোয় কাজের ঘরে ঢোকে বাড়ী ফিরে, রাত বারটা একটায় খোজ নিতে গিয়ে মমতা দ্যাখে সেই ঘরেই বাড়তি বিছানাটিতে সে ঘুমিয়ে আছে। মাথা ঘুরে যায় মমতার। তার সঙ্গ পাবার জন্য কাজ যার চুলোয় গিয়েছিল, গভীর বাত্রে ঘুম পেলে যে তার কাছে ছেলেমানুষের মত নালিশ জানাত মানুষের ঘুম পাওয়ার বিরুদ্ধে, তাকে ছাড়াই তার দিবারাত্র কাটছে, ঘুম আসছে মমতাহীন শৃঙ্গ বিছানায় ! মমতা জিজ্ঞেস করে, “কি প্রয়েছে তোমার ? আমায় বলে । বলতে তবে আমাকে ৷” “কি হবে ? কিছু হয় নি।” “কিছু হয় নি ? একি অন্যায় বথা । তুমি ভাব আমার ধৈৰ্য্যের সীমা নেই ?” মমতার স্বর কড়া, ঝাঁঝালো । “আমি তো কিছু করি নি তোমার ? আমি নিজের মনে আছি।” So 9