পাতা:দর্পণ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চেতনা নিয়ে সুৰ্য্যকে তার বড় বেশী জীৰ্ণ শীৰ্ণ ঠেকাল, মনে হল তারা যেন “অসুখ হয়েছে, কঠিন অসুখ । মনটা বড় খারাপ হয়ে গেল ।রম্ভার কলকাতা সে যাচ্ছে বটে মাত্র কয়েকটা দিনের জন্য, কিন্তু শৈশবে একবার এবং এত বড় হয়ে আরেকবার যে কলকাতা যায়, যাওয়াতে কি তার দিনের হিসাব থাকে ? ফিরে আসবার কথা কি সে ভাবতে পারে যাবার সময় ? অনেক দূরের ষ্টেশনে গিয়ে ট্রেনে ওঠা পৰ্যন্ত রম্ভ। তাই কাতর হয়ে রইল। তারপর রেলগাড়ীতে চেপে চলার আনন্দ ও উদ্দীপনার মাদক রিসে রম্ভার যখন নেশা ধরে গেল, গতিশীল জড় ও জীবন্ত সব কিছুকে তীব্রভাবে ভালবাসবার আকাজক্ষা জাগল, তখন সুৰ্য্যর কথা তার মনেই রইল না । কলকাতায় পৌঁছে তারাও শশাঙ্কের সঙ্গে লোকনাথের প্রকাণ্ড বাড়ীতে উঠল। তাদের মত অনাহুত ও তুচ্ছ আত্মীয়-পরের অস্থায়ী বসবাসের জন্য বাড়ীতে স্থায়ী ব্যবস্থা করা আছে । এই বাড়ীতে রামপালের সঙ্গে দেখা হল ।রম্ভার। লোকনাথের একটি কাঠের গোলা ও আসবাব তৈরীর মস্ত কারখানা আছে। বিস্তৃত অঙ্গনে করাতিরা চেরে নানা কাঠের মোটা মোটা গুড়ি, কারখানার মধ্যে তৈরী হয় নানা ধাচের ও নানা দামের চেয়ার টেবিল খাট পালঙ্ক কোচ আলমারি। রামপাল এখানে মিন্ত্রির কাজ করে। প্ৰথমে সে কমদামী সাধারণ আসবাব তৈরীর কাজ আরম্ভ করেছিল, তারপর অল্পদিনে সে দামী সৌখান জিনিষ তৈরীর কাজে লেগেছে । তার হাতের কাজ বড় সুন্দর হয়, তৈরী জিনিষের কারুকাৰ্য্য একটা সৰ্ব্বাঙ্গীণ রূপ পায়। কয়েক টুকরো দামী কাঠ নিয়ে সে খানিকটা ফাকি দিয়ে ও খানিকটা অবসর সময়ে ছোট একটি সুদৃশ্য কাঠের বাক্স তৈরী করছিল, কারুকাৰ্য্য যখন প্ৰায় শেষ হয়ে এসেছে কারখানার bም