পাতা:দর্পণ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গাড়া থেকে নেমে রম্ভ বাড়ীর চৌকাঠ ডিঙিয়ে ভেতরে যাবার ক্ষণেক পরেই চার পাঁচটি নারী কণ্ঠে কান্না ধবনিত হয়ে উঠল। কারা কঁাদের কেন কঁদে ? ও, বীরেশ্বরের মেয়ে, বৌ ও ছেলের বেীরা শোক করছে। অন্যমন হওয়ার জন্য লজিত হয়ে রামপাল তাড়াতাড়ি গাড়ী থেকে নেমে পড়ল। পিঠা পিঠি দু’ভায়ের মধ্যে বয়সের তফাৎ যত কম হওয়া সম্ভব, শুমলীল ও জীবনলাল ততটুকু ছোটবড়, কিন্তু দু’জনের চেহারা থেকে সেটা অনুমান করা যায় না। বত্ৰিশ বছর বয়সে শ্যামলাল ভুড়ি বাগিয়ে মাংসপেশী চিল করে মুখে ভারিকি ভাব এনে নিজের চেহারাটি দাড় করিয়েছে, চল্লিশ পেরোনো গেরস্তের মত, জীবনলালকে তার চেয়ে অনেক ছোট দেখায়। বাপের মত তার শক্ত বাধুনির জোরালো দেহ। শুষ্ঠামলাল রোগ এবং লম্বা। নতুন গোপ তার এখনো তামাকের ধোঁয়ায় বিবৰ্ণ হয়ে যায়নি। অশোচের খাওয়া, জামাই বাড়ী এলেও অল্পসময়ের মধ্যেই সংক্ষেপে সব চুকে গেল। বড়ঘরের দাওয়ায় চাটাই পেতে তারপর কথা বলতে বসল। রামপাল, রম্ভার তিন ভাই এবং তাদের খুড়ো কাশীশ্বর। ছোট কলাবাগানটির ওপাশেই কাশীশ্বরের ঘর। তার অপরিপুষ্ট শীর্ণদেহে আর পরণের ছেড়া ময়লা কাপড়ে দারিদ্র্যের ছাপ অতি স্পষ্ট। একটু ভাল অবস্থার ভাইপোদের সঙ্গে বসে আলাপ করার ভঙ্গিটাও খাপছাড়া রকমের বিনায়াপন্ন । খুড়োর দিকে পিছন ফিরে বসে তামাক টানতে টানতে শুমলাল ধীরে ধীরে গোড়া থেকে সমস্ত ব্যাপারের ইতিহাস রামপালকে বিশদভাবে শুনিয়ে দিল। শুনতে শুনতে রামপালের মনে হল, সে যেন একটু হেরম্ব চক্ৰবৰ্ত্তীর দিকে টেনে কথা কইছে, একেবারে সমর্থন করতে না পারলেও খুব বেশী দোষ দেখতে পাচ্ছে না লোকটার। আহা, হেরম্ব চক্ৰবৰ্ত্তী কি আর ভালমানুষ দেবতা, তা বলছে না। শুষ্ঠামলাল । ওসব লোক R Y br