পাতা:দর্পণ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অপর প্রান্তে, সেখান থেকে প্ৰাণপণে চেচিয়ে প্ৰতিবেশিনী কার সঙ্গে কথা বলে গলার আওয়াজ কৃষ্ণেদুর কাণে পৌঁছে দিল, তারপর নিঃশব্দ দ্রুতপদে ফিরে এল এৰরের পাশে ভঁড়ার ঘরে। দেয়াল ঘেষে দাড়িয়ে কাণ খাড়া করে শুধু বোঝা গেল কৃষ্ণেন্দু কথা বলছে, কথাগুলি শোনা গেল না। হাসিমুখে ঘাড় কাত করে সে কিছুক্ষণ পাথরের মূৰ্ত্তির মত দাড়িয়ে রইল, কিন্তু গলা কৃষ্ণেদুর চড়ল না। মুখে হাসি নিয়েই দিগম্বরী তখন শোবার ঘরে ফিরে গেল, শশাঙ্ককে বলল, “ঠাকুরপো কি যেন মতলব আঁটছে। আমরা না বিপদে পড়ি।” কৃষ্ণেন্দুর কথা শেষ হলে রম্ভ হতাশ ভাবে বলে, “কিন্তু হেরম্বের কি শাস্তি হবে কেষ্টবাবু? ও নয়। আর অত্যাচার না করল, সবাইকে ক্ষতিপূরণ দিল, ওতে ওর কি হবে ? মোর ব্যাপকে মেরে ওতো টেক্কা মেরে বেঁচে থাকবে, গায়ে আঁচড়টি লাগবে না।” “আঁচড় লাগবে রম্ভ। বুকে আঁচড় লাগবে। কেটে কেটে লঙ্কা বাটা লাগিয়ে দেয়ার চেয়ে বেশী জলবে ওর বুকটা-নিজের বুকটা-নিজের জালায় নিজে পুড়ে মরবে। তুমি বুঝতে পার না, এ অঞ্চলে আর কোনদিন ও জুলুম চালাতে পারবে না, মাথা তুলতে পারবে না। কেউ আর ওকে ভয় করবে না। শুধু হেরম্ব নয়, আর যে কেউ অত্যাচার করতে আসবে, এখানকার লোকেরা জানবে কি করে এক হয়ে তার সঙ্গে লড়ে তাকে হারাতে হয় ? হেরম্বকে মারলে তো একটা হেরম্ব মীরবে, আর এ ভাবে আমরা সব হেরম্বকে ধবংস করার কাজ সুরু করতে পারব। বীরেশ্বরের প্রাণ দেওয়া সার্থক হবে ।” আরও কিছুক্ষণ রম্ভাকে বুঝিয়ে কৃষ্ণেন্দু বাইরে যায়। কয়েকজন Carik VS J Gwei KVS APCIR ক্ষোভে ও হতাশায় রম্ভাকে নিঝুম হয়ে যেতে দেখে হীরেন বলে, “নৱেশ, তুই একটু বাইরে যা দিকি।” Q8