পাতা:দর্পণ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কৃষ্ণেন্দু হঠাৎ জিজ্ঞেস করে বসল : “নাথুকে মারবার পর সকলে কি করল ? চুপ করে রইল ?” ‘সবাই ক্ষেপে গিয়েছিল”। তাইতে বলছি কেষ্টবাবু, নাথুর অপমান সবাই গা পেতে নিয়েছে।” “তখন কেউ কিছু করে নি ? নাথুকে মারবার সময় ?” গণি উৎসাহিত হয়ে বলল, “করেনি ? সবাই তেড়ে গিয়েছিল মারতে। উমাবাবু খুন হয়ে যেতেন।” শ্ৰীপতি অনুযোগের সুরে বলল, “রামপাল কিছু করতে দিলে না। কেষ্টবাবু। সবাইকে ঠেকিয়ে রাখল। ওর জন্যে। নইলে কি পুলিশ আনতে পারে ? উমাবাবু উদিকে পুলিশকে ফোন করেছেন, ও এসে আমাদের ভাওত দিয়ে বসিয়ে রাখলে চুপচাপ-উমাবাবু আসছেন, উমাবাবু মাপ চাইবেন, উমাবাবু নাথুকে একশো টাকা দেবেন, আরও কত কি ?” কৃষ্ণেন্দুর ত্রুকুটি দেখে গণি আরেকটু ভাল ভাবে ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে বলল, “রামপাল নিজে ভাওতা দেয় নি। ও লোক ভাল, বুদ্ধি একটু কম। উমাবাবু যা বলে দিয়েছেন, ও এসে আমাদের তাই বলেছে। ওর দোষ নেই।” শ্ৰীপতি খোচা দিয়ে বলল, “দোষ নেই কিসের ? ফফরদালালি করতে আসে কেন যেচে ?” কৃষ্ণোয় প্রশ্ন করল, “রামপাল সবাইকে ঠেকাল কেন গণি ? উমাবাবুকে খাতির করে ?” গণি জবাব দিল, “না, খুন হয়ে যাবেন বলে। খুন হলে পুলিশ আসবে, দু’চারজন ফঁাসিতে লটকাবে-কাজটা ঠিক করেছিল।”

  • ওরা বুদ্ধি কম বলছি কেন তবে ?” মন্তব্য করে কৃষ্ণেন্দু তখনকার মত চুপ করে গেল। কিন্তু পরে আবার প্রশ্ন করল, “পুলিশ। শুধু রামপালকে অ্যারেষ্ট করল কেন ?”

8