পাতা:দশকুমার.djvu/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উপক্রমণিকা । ৩৩ লম্বিত মুক্তাহার ছিন্ন হুইয়া ভূতলে পতিত হইল । তৎকালে হিমালয়ের এক জলাশয়ে মহর্ষি মার্কণ্ডেয় অবগাহন করিয়া "মগ্রেীষ্মগ্ন হইতেছিলেন। দৈবাৎ ঐ মুক্তাহার তাহার পলিত মস্তকের উপর পতিত হইল। হারের শুভ্ৰ কান্তিতে পকু কেশগুলির দ্বিগুণ শোভা হইল। হার পতনের আঘাতে মহর্ষির বেদন বোধ হওয়াতে তিনি ক্রুদ্ধ হইয়া আমাকে এই শাপ দিলেন পাপে ! তুমি চৈতন্যশূন্য ধাতুময় আকার প্রাপ্ত হও। তখন আমি বিনয় বচনে আপনাকে নিরপরাধিনী বিজ্ঞাপন করিয়া তাহাকে প্রসন্ন করিলাম। তিনি প্রসন্ন হইয়া বলিলেন তোমাকে মাসদ্বয় মাত্র রাজবাহনের চরণ যুগলের বন্ধনী হইয়৷ থাকিতে হইবে, মাসদ্বয় অতীত হইলে পুনৰ্ব্বার পুৰ্ব্ব রূপ প্রাপ্ত হইবে । এইরূপ শাপ গ্রস্ত হইয়া আমি রৌপ্য শৃঙ্খলের আকার ধারণ করিয়া শঙ্কর পৰ্ব্বতে পতিত রহিলাম । অনন্তর ইক্ষাকু বংশীয় বেগবান রাজার পৌত্র, মানসবেগের পুত্র বীরশেখর নামে এক বিদ্যাধর ঐ শৃঙ্খল পাইয় গ্রহণ করিলেন । বৎসরাজ বংশীয় বিদ্যাধর-চক্ৰবৰ্ত্তী নরবাহনদত্তের সহিত বীরশেখরের পিতার শক্রতা ছিল । বীরশেখর সেই বৈর নির্যাতনের বাসনা করিলেন। কিন্তু সম্পূর্ণ সামর্থ্য না থাকাতে তপস্বী দপসারের আশ্রয় লইলেন। দপসার তাহার আচার ব্যবহারে পরিতুষ্ট হইয় তাহীকে আপন ভগিনী অবন্তিসুন্দরী দান করিবেন। প্রতিজ্ঞা করিলেন। কিছুকাল পরে বীরশেখর এক দিন নিশাকরকিরণে গগণ মণ্ডল আলোকময় দেখিয়া, অবস্তিসুন্দরীকে দেখিবার নিমিত্ত চঞ্চল-চিত্ত হইলেন, এবং তৎক্ষণাৎ আসিয়া মানসারের অন্তঃপুরে প্রবেশ করিলেন । দেখিলেন, আবন্তিসুন্দরী তোমার অঙ্কে নিঃশঙ্কে শয়িত ও নিদ্রিত হইয়া রহিয়াছেন। বীরশেখর সেই ভাব দেখিয়া অত্যন্ত কুপিত হইলেন। কিন্তু তোমার অলৌকিক ও অসামান্য প্রভাবে তোমাকে নিগ্ৰহ করিতে পারিলেন না । সেই রৌপ্য শৃঙ্খল দ্বারা তোমার পাদপদ্ম স্বয় বদ্ধ করিয়া প্রস্থান করিলেন । -