পাতা:দশকুমার.djvu/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ উচ্ছস । অর্থপাল চরিত । o অর্থপাল কৃতাঞ্জলি হইয়া বলিতে লাগিলেন দেব ! আমি তোমার অন্বেষণার্থ ভূমণ্ডলে পর্যটন করিতে করিতে একদা বারাণসী উপস্থিত হইলাম । মণিকর্ণিকার নিৰ্ম্মল জলে অবগাহন পুৰ্ব্বক ভগবামৃ অবিমুক্তেশ্বরকে প্রদক্ষিণ প্রণাম করিয়া ইতস্ততঃ ভ্রমণ করিতেছি, দেখিতে পাইলাম, এক দীর্ঘাকার বলবান পুরুষ উভয় কক্ষে উভয় হস্ত বিন্যস্ত করিয়া অশ্রান্ত অশ্রু মোচন করিতেছে। তাহার আকার প্রকার দর্শনে বোধ হইল, কোন বন্ধুর বিরহে তদৃশ কাতর হইয় রোদন করিতেছে । আমি তাহার নিকট উপস্থিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলাম ভদ্র! তুমি এরূপ রোদন করিতেছ কেন? জানিতে ইচ্ছা হইতেছে, যদি গোপনীয় না হয়, বল। সে আমার প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া রোদনে বিরত হইল । এবং এক করবীর তরু তলে আমার সহিত উপবিষ্ট হইয়। কখ অণরন্তু করিল। মহাশয় ! আমার নাম পুণভদ্র । আমি এক ভদ্র বংশে জন্ম গ্রহণ করিয়াছি। পিতা আমাকে শৈশব সময়ে সাতিশয় সুেহ সহকারে লালন পালন করেন, এবং আমাকে সুশিক্ষিত ও সচ্চরিত্র করিবার নিমিত্ত বিস্তর চেষ্টা করিয়া ছিলেন । কিন্তু আমি ভাগ্যদোষে স্বেচ্ছাচারী হইয়া ক্রমে ক্রমে চোর হইয়া উঠিলাম । এক দিন এই কাশী পুরীতে এক ধনবান বণিকের গৃহে চুরি করিয়া ধরা পড়িলাম। কাশীরাজের প্রধান অমাত্য কামপাল, চৌর্যাপরাধে হস্তী দ্বারা অামার প্রাণ বধের আদেশ করিলেন । অবিলম্বেই আমি বধ্যভূমে আনীত হইলাম। কামপাল স্বয়ং সমীপবৰ্ত্তী প্রসাদের ছাদের উপর বসিয়া দেখিতে লাগিলেন । হস্তিপক, রাজাজ্ঞানুসারে মৃত্যুবিজয় নামক মত্তহস্তী লইয়া আমার সম্মুখবৰ্ত্তী হইল। চতুদিকে লোকরণ । লোকের কলরবে হস্তীর কণ্ঠলম্বিত ঘন্টার ধ্বনি দ্বিগুণিত হইয়া উঠিল ।