আমরা সেই ঘরের ভিতর প্রবেশ করিবামাত্রই, যে পত্রখানি তিনি লিখিতেছিলেন, তাহা নিতান্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খণ্ডে ছিঁড়িয়া সেই স্থানে ফেলিয়া দিলেন, এবং সংবাদপত্রখানির উপর অপর কতকগুলি কাগজ-পত্র স্থাপিত করিয়া আমাদিগের দিকে একবার লক্ষ্য করিলেন ও কহিলেন, “কে? বালমুকুন্ আসিয়াছ? তোমার সঙ্গে এই যে বাবুটী আসিয়াছেন, ইনি কে?”
মাণিকচাঁদের কথার উত্তর করিবার পূর্ব্বই বালমুকুন্ সেই স্থানে একখানি চৌকির উপর উপবেশন করিলেন, এবং আমাকে আর একখানি চৌকি দেখাইয়া দিয়া, সেই স্থানে আমাকে বসিতে কহিলেন। আমি সেই স্থানে উপবেশন করিলে পর, বালমুকুন্ মাণিকচাঁদের কথার উত্তরে কহিলেন, “আমি ইহাকে সঙ্গে করিয়া আনিয়াছি, ইনি আমার একজন বিশ্বাসী বন্ধু, এবং ব্যবসা-কার্য্যে ইনি সবিশেষ নিপুণ; কিন্তু আজকাল ইনিও বেকার অবস্থায় বসিয়া আছেন, ইহার হস্তে কোন কর্ম্ম-কার্য্য নাই। বঙ্গদেশের নানাস্থানে আমাদিগের শাখা-কার্য্যালয় খুলিতে হইলে, অনেক লোকের প্রয়োজন হইবে, তাই আমি ইঁহাকে সঙ্গে করিয়া আনিয়াছি। আমি ত ইহাকে সবিশেষ উপযুক্ত লোক বলিয়া জানি। এখন আপনি ইহার সহিত প্রয়োজন মত কথাবার্ত্তা কহিয়া দেখুন, আপনার বিবেচনায় যদি ইনি আমাদিগের কার্য্যোপযোগী মনে করেন, তাহা হইলে ইহাকেও আপনাদিগের কার্য্যে নিযুক্ত করিতে পারেন।”
বালমুকুনের এই কথা শুনিয়া মাণিকচাঁদ আমার প্রতি লক্ষ্য করিয়া কহিলেন, “কেমন মহাশয়! আপনি আমাদিগের ব্যবসাকার্য্যে আমাদিগের সহিত মিলিত হইতে ইচ্ছা করেন কি?”