বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:দায়ে খুন - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫২
দারোগার দপ্তর, ৮৩ সংখ্যা।

কোন কার্য্য করি নাই। চুরি করিয়াই এতকাল কাটাইয়া আসিয়াছি, ও অনেকবার ধরা পড়িয়া জেলেও গিয়াছি সত্য; কিন্তু কখনও কোন গরিবের দ্রব্য অপহরণ করি নাই, বা অল্প মূল্যের দ্রব্যে কথনও হস্তার্পণ করি নাই। যখন যে স্থানে যে কার্য্যে হস্তার্পণ করিয়াছি, তখন সেই কার্য্যে দশ বিশ হাজারের কম লইয়া সেই স্থান হইতে প্রত্যাবর্ত্তন করি নাই; কিন্তু একটীমাত্র পয়সাও কখনও রাখিতে পারি নাই। যেরূপ ভাবে আয় করিয়াছি, ব্যয় করিয়াছিও সেইরূপে।

 “বোম্বাইয়ের যে মহাজনের গদিতে আমি চুরি করিয়া ধৃত হইয়াছি, অনেকদিবস হইতে সেই গদিতে চুরি করিবার আমার নিতান্ত ইচ্ছা ছিল; কিন্তু এ পর্য্যন্ত কোনরূপেই সুযোগ করিয়া উঠিতে পারিতেছিলাম না। কিরূপ অবস্থায় ও কোথায় যে উঁহার ধনভাণ্ডার স্থাপিত, তাহা এ পর্যন্ত জানিতে পারিয়াছিলাম না বলিয়াই, এতদিবস আমার মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করিতে পারি নাই। যে সময় উঁহার গদিতে একজন গোমস্তার প্রয়োজন হইল, সেই সময় আমি অন্তরালে থাকিয়া, যাহাকে আপনারা এখন মাণিকাচাঁদ বলিয়া জানিতে পারিয়াছেন, তাহাকে সেই কার্য্যে নিযুক্ত করিবার নিমিত্ত অনেকরূপ চেষ্টা করিয়াছিলাম; কিন্তু কোনরূপেই কৃত-কার্য্য হইতে পারি নাই। লাভের মধ্যে মাণিকচাঁদ সেই স্থানে দুই চারিবার যাতায়াত করাতে তাঁহারা উহাকে চিনিতে পারিয়াছিলেন। নতুবা আমি নিজে প্রকাশ্যরূপে এই কার্য্যে কখনই থাকিতাম না। মাণিকচাঁদ যে কার্য্য করিয়াছিল, আমি তাহাই করিতাম, আমার কার্য্য মাণিকচাঁদের দ্বারা সম্পন্ন হইত।