পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

খাওয়া-দাওয়ার কথা ভুলে গিয়েচি। বেলা এগারোটার কম হবে না কোন রকমে, কিন্তু সেজন্যে আমার কোনকষ্ট নেই। চারিধারে সবজি আউশের জাওলা যেন বিরাট সবােজ মখমল বিছিয়ে রেখেচে পথিবীর কালো মাটির বকে। নীলকণ্ঠ আর ডাক আসচে। মাঠের চারিদিক থেকে-মেঘ। থমকানো আকাশের নীলকৃষ্ণ শোভা আর অবাধ মাত্তির আনন্দ-সব মিলে এরা আমায় যেন মাতাল করে তুলেচে। বশিষ্ট এল-একটা বড় বটতলায় আশ্রয় নিলাম। টপ টপ করে বড় বড় বন্টির ফোঁটা গাছের ডাল ভেদ করে মাঝে মাঝে গায়ে পড়তে লাগলো। বান্টিতে বড় মাঠগলো ধোঁয়ার মতো দেখাচ্চে। বটতলায় একটা ছোট রাখাল ছেলে আমার মতো আশ্রয় নিলে। তার বয়েস দশবারো বছরের বেশী নয়। হাতে পাঁচন, মাথায় তালপাতার টোকা। —বস্তুভ পানি এয়েল বাবা—হ্যাঁ, তাই তো-বোস, ওখানে-বাড়ি কোথায় ? --সদরপর বাবা। ওই ঝে দেখা যাচ্চে-- বান্টি থামলে সন্দরপর গ্রামের মধ্যে ঢাকলাম। গ্রামের মধ্যে দিয়েই পথ। বড় বাড়ি দাঁচারখানা চোখে পড়লো, খবই বড় বাড়ি-বত্তমানে লোকজন আর বিশেষ আমবন, যেমন এ অঞ্চলের সব গ্রামেই দেখতে পাওয়া যাবে। একটা খাব বড় বাড়ি দেখে তার সামনে দাঁড়ালাম। এক সময়ে খব ভালো অবস্থার গহন্থের বাড়ি ছিল এটা, নইলে আর এত বড় বাড়ি তৈরি করতে পারে না । এখন যারা থাকে, তাদের অবস্থা যে খব ভালো নয়, এটা ওদের দোতলার বারান্দাতে পরানো চাঁচের বেড়া দেখে আন্দাজ করা কঠিন হয় না। করগেট টিন জোটেনি। তাই বাঁশের চাঁচি দিয়েচে । একজনকে জিগ্যেস করলাম--এটা কাদের বাড়ি বাপ ? ----বাবদের বাড়ি। এ গাঁয়ের জমিদার ছেলেন। ওঁয়ারা--- —এখন কেউ নেই ? --থাকবেন না কেন বাবা, কলকাতায় থাকেন। বাবদের ছোট সরিকেরা এখন থাকেন এ বাড়িতে। তেনাদের অবস্থা ভালো নয়। বাবরা সব উকিল, মোক্তার. অনেক পয়সা রোজগার করেন, এখানে আর আসেন না। অথচ যখন সন্দরপরের বাইরে এলাম, তখন মসলমান ও কাঙালী পাড়ার অবস্থা দেখে চোখ জড়িলো। ওরা প্রায়ই বাস করে ফাঁকা মাঠে, বাড়ির কাছে বনজঙ্গল কম, খড়ের হলেও বেশ পরিস্কার পরিচ্ছল্প, ধানের গোলা দাতিনটি অনেকের বাড়িতেই চোখে পড়ে, তরিতরকারির বাগান করে রেখেচে বাড়ির পাশেই দীপাঁচটা গোর সকলেরই আছে। এদের সর্বাস্থ্য খাব খারাপ নয়-যারা খেটে খায় এমন লোকের মধ্যে ম্যালেরিয়া হতে বেশি দেখিনি-ডায়েবেটিস, ডিসপেপসিয়া, ব্লাডপ্রেসারের নামগন্ধ নেই সেখানে । ওরা যখন মরে, তখন বেশির ভাগ মরে কলেরাতে। শীতের শেষে বাংলার পাড়াগাঁয়ে চাষাপাড়া মরে ধলধাবাড়া হয়ে যেতে দেখেচি কলেরাতে। --অথচ ভদ্রলোকের পাড়ায় এ রোগ খািব কম ঢাকতে দেখেচি। তবে আজকাল গ্রামে গ্রামে নলকােপ বসবার ফলে ম্যালেরিয়া যতটা না কমিক, কলেরার মড়ক অনেক কমেচে। নলকপের জল বারোমাস ব্যবহার করে, অথচ বারোমাস ম্যালেরিয়ার ভুগে জীৰ্ণশীর্ণ, এমন লোক বা পরিবার অনেক দেখোঁচ। किञ्ट्र आधि वा क्लटङ बाछिणदध ܦܬܬ