পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একই প্রকৃতির, বিশেষ কোনো পার্থক্য নেই ; কেবল মাত্র এইটকু যে, পহ্মেবান্ত অরণ্যে বনস্পতিজাতীয় ফাণ যথেস্ট, চন্দ্রনাথের বনে ও-জাতীয় ফাণ আদৌ নেই। তাছাড়া এমন পাহাড়, বনানী ও সমাদ্রের একত্র সমাবেশ আর কোথাও দেখা যাবে না বাংলাদেশে। ভারতবর্ষে ও দক্ষিণ ভারতের দক্ষিণ উপকালের কয়েকটি স্থান ও মালাবার উপকােল ছাড়া আর কোথাও নেই। অনেকে ভাবেন চন্দ্রনাথ ছোট একটি পাহাড় হয়তো ; আসলে চন্দ্রনাথ একটি পাহাড় নয়, পাহাড়শ্রেণী। দৈঘ্যে ষাট মাইলের কম নয়। পরস্পর সমান্তরাল ভাবে অবস্থিত। এর চারটি থাকা আছে, সামনেরগলি তেমন উচ্চ নয় ; সকলের পেছনের शाकद्ध छेफ़ऊा १ाcg gलए शङाद्ध था। চন্দ্রনাথ পাহাড়শ্রেণী আসলে পািব্ব হিমালয়ের একটি ক্ষদ্র শাখা, যেমন আরাকান ইয়োমা বা সমগ্র উত্তরব্রহ্ম, আসাম, পাৰস্বত্য ত্রিপরার ছোট বড় সকল শৈলশ্রেণীই হিমালয়ের দক্ষিণ বা পৰবৰ্তমখী শাখাপ্রশাখার বিভিন্ন অংশ। সেই একই নগাধিরাজ হিমালয় বিভিন্ন নামে বিভিন্ন মাত্তিতে পরব্রহ্মের বহ অবতারের মতো এসব অঞ্চলে ছড়িয়ে আছে। এদিন পান্ডাঠাকুরের তাড়ায় বেশিক্ষণ পাহাড়ের চড়ায় বসা সম্পভব হল না। সন্ধ্যা হয়ে যাবে। এই বনে, সারাপথে একটাও লোক নেই। সেদিন নেমে এলবাম বিকেলের দিকে। ওদের সপরি বাগানের মধ্যে ছোট্ট চাঁচের আর টিনের বাড়ি, পথের ধারে পাটিপাতার গাছ আর বেতবন।। পাটি-পাতার গাছ থেকে শীতল পাটি বোনা হয়-এ অণ্ডলের সব্বত্র এ গাছ বনে-জঙ্গলে দেখা যায় ; ঘন সবজি চওড়া পাতা, অনেকটা আমাদের দেশের বন-চালতে গাছের মতো ডাল-পালার আকৃতি। সেদিন সন্ধ্যায় সপরি বনের মধ্যে, ছোট ঘরে একা চপ করে বসে আছি, সামনে একটা মাটির প্রদীপ জৰলচে, বাইরে তারাভরা আকাশ, দরে চন্দ্রনাথ পাহাড় শ্রেণীর কৃষ্ণ সীমারেখা। কতবার দেখোঁচি এমন সব সময়ে যেন মাটির পথিবী আর জ্যোতিলোকের গ্ৰহতারা এক হয়ে যায়-স্বপন ভেঙে উঠে চাঁদের বাতির তলায় নিদ্রামাঞ্চন পথিবীর রােপ দেখে কতবার অবাক হয়ে গিয়েচি-খানিকটা চিনি, খানিকটা চিনি না। একে। কি বিরাট ইঙ্গিত সমগ্র ছায়াপথের, পত্রপল্লবের মন্মরধৰনির, শান্ত জ্যোৎস্নালোকের ঝিল্লীমখর নিশীথ রাত্রির!— পথের ধারে শােধ ওদের ডাক, বহকেদর পথ বোপে। ঘর থেকে অন্য রকম শৈানাবে, পথ থেকে অন্য রকম। তারপর যা বলছিলামঘরের মধ্যে বসে আছি, এমন সময় একটি তরণী বধ ঘোমটা দিয়ে ঘরে ঢাকে। আমার সামনে একবাটি মগের ডাল আর একটা কি গড় রাখলেন। কোনো কথা বললেন না। আমি একটা আশচয্য না হয়ে পারলাম না-হেমন্তের শিশিরাদ্র রাত্রে মাগের-ডাল-ভিজে কি রকম জলখাবার! ভাবলািম-হয়তো এখানে এইরকমই খায়। পরের বাড়ি অতিথি, আহায্য সম্পবন্ধে নিজের মতামত এখানে চলবে না। আমার। ডাল-ভিজে কিছ খেয়ে যখন বাটিটা রেখে দিয়েচি, তখন বন্ধটি একবাটি গরম দধি এনে সামনে রাখলেন। এবার আমার সন্দেহ হল, আমি বললাম—এখন দধি কেন মা ? সন্ধ্যেবেলা আমি তো দধি খাইনে। পাশডাঠাকুরের সন্ত্রী চট্টগ্রামের কথ্য ভাষায় নিম্পনস্বরে কি বললেন ভালো বঝলাম SO