পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করেচি। উইটেনহ্যামে অনেক আপেল বাগান ছিল। বেশ জায়গা বাবা --তোমার সত্ৰী বেশ ভালো ছিলেন নিশ্চয়ই—ভালো মানষ ছিল আর খাব ছেলেপলে ভালোবাসতো। আমায় যত্ন করতে খবই। আমায় বলতো, তোমার দেশে আমায় নিয়ে যাও, কি রকম দেশ দেখবো।-- -এনেছিলে নাকি ? --ज्धान्ऊाभ श्शठा, বাব, সে দশ বছর পরে মরে গেল। আমার কিছ ভালো লাগলো না, সেখান থেকে একেবারে সোজা দেশে চলে এলাম। সে বাঁচলে উইটেনহ্যামেই বরাবর থাকতুম হয়তো। আপেলের বাগান করবার বন্ড শখ ছিল -আচ্ছা এসব কতদিন আগের কথা হবে ? --পঞ্চাশ পঞ্চান্ন বছর আগেকার কথা বাব, কি তারও আগের কথা। উইটেনহ্যামে একবার ধামধাম হল, গিজায় গান বাজনা হল, শািনলাম নাকি মহারানীর কত বছর বয়স হল, সেই জন্যে। ওরকম হচ্চে। মহারানী তখন বেচে-কি ধমধাম হল “পাড়াগাঁয়ে! আবদাল লোকটা ভিকটোরিয়ান যাগের লোক, মহারানীর ডায়মন্ড জবিলী দেখে এসেচে। বিলেতে বসে। কিন্তু ওকে দেখে কে ভাববে সে কথা! আবদলে এখন ‘পাহাড়ের ধারের ধানের ক্ষেতে ছোট কুড়ের মধ্যে বসে পাহারা দেয়। আর শীতলপাটি বোনে। বয়স হল এত, তব সে বসে থাকে না। আওরঙ্গজেবপর গ্রামে সবই মসলমান। আমার বড় ভালো লেগেছিল। ওদের, "আমাকেও বড় পছন্দ করত ওরা। যেদিন আসি, অনেকে গ্রাম ছেড়ে অনেকদরে পয্যন্ত এসে আমায় এগিয়ে দিয়ে গেল। পথ বেয়ে চলোঁচ:৷ এবার দেখলাম পাহাড়ের নীচে মাঝে মাঝে অনেক গ্রাম পড়ে এ দিকটাতে। পাহাড়েই এসব গাঁয়ের একটা বড় সম্পদ। পাহাড় যোগায় জবালানি কাঠ ঝরাপাতা ; ঝরনা যোগায় জল ; তা ছাড়া পাথর কুড়িয়ে এনে এরা ঘরবাড়ির দেওয়াল করেচে, রোয়াক করেচে। লম্বা টানা চন্দ্রনাথ পাহাড়শ্রেণীর দশ্য এখান থেকে দেখা যায় বড় সদর। বনের শোভাও অদভুত। মনে হয় এ একটা আলাদা জগৎ । যারা এ বনের কোলে “গ্রামে বাস করে, এর বিচিত্র বাক্ষলতার সমাবেশ, বনফলের শোভা, পাখীর ডাক, -ঝরনার কলতানের মধ্যে যাদের শৈশব কেটেচে, তারা একটা বড় সৌন্দয্যময় অভিজ্ঞতাকে লাভ করেচে। জীবনে। তবে মাঝে মাঝে বাঘ আসে এ অভিযোগ সকল গ্রামেই শানেচি। শীতকালের দিকে বেশি বার হয়, গোর ছাগল ভেড়া তো নেয়ই, মানষে পেলেও ছাড়ে না। গ্রামের লোকদের বিশবাস, সন্ধ্যার পরে পাহাড়ে ওঠা-নমা বা জঙ্গলে ঢোকা উচিত নয়। ভূত আছে, অপদেবতা আছে, আরও কত কি আছে। সন্ধ্যার পরে এরা প্ৰাণান্তেও পাহাড়ে যাবে না। এখানকার এক গ্রামে এক ব্ৰাহ্মণবাড়ি মেয়ের বিয়ের নিমন্ত্রণ খেয়েছিলাম। “স্থানটি ফেণী সাবডিভিসনের অন্তগত ধম স্টেশন থেকে পনের ষোল মাইলের মধ্যে। এদের দেশে ভোজের পকেবা ফল ও মিন্টান্ন খেতে দেয়, তারপর আনে লাচি, তারপরে * ভাত আর তরকারি। মেয়ের বিয়েয় ভাত খাওয়ায়, এ অন্য কোথাও দেখিনি। ধমে সেন্টশনে এসে ট্রেনে চড়ে চলে এলমে আখাউড়া। এক সময়ে এ অঞ্চল বঙ্গোপসাগরের কুক্ষিগত ছিল তা বেশ পন্ট বোঝা যায় -বিশাল সমতলভূমি ক্রমশ নীচ হতে হতে সমদ্রের জল ছায়েচে। ধানের সময়