পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

—HIN STY! T (FIGA BR TICE ? -আর যা আছে তা সামান্যই। ধানই এদেশের প্রধান ফসল। গোলার ধান বেচে সংসারের কাপড়চোপড়, ওষদ বিষাদ, বিয়ে-খাওয়া সব হয়। শধ মাত্র ধানের ফসলের ওপর এখানকার জীবনযাত্রা প্রতিষ্ঠিত। দেখোঁচ "সকালে উঠে ছেলেমেয়েরা পালতা ভাত খায়, বড়লোকেরা খায় চিড়ে, মাড়ি বা খই। :মাড়ির চেয়ে এখানে চিড়ে বা খইয়ের চলনই বেশি। দাপরে গরম ভাত-বিকেলে ছেলেমেয়েদের জন্যে আবার বাসি ভাত বা খই চিড়ে। রাত্রে সকলের জন্যে আবার ‘গরম ভাত। ধান থেকে যা পাওয়া যায়-তা ছাড়া অন্য কোনো খাদ্য এখানে মেলে না, খেতেও এরা অভ্যস্ত নয়। অবিশ্যি তরিতরকারি মাছ দধের কথা বাদ দিই। :ফলের মধ্যে নারিকেল ছাড়া অন্য কিছ পাওয়া যায় না। যেদিন সন্ধ্যাবেলা আমি এখান থেকে চলে যাই, সেদিন সকালবেলা গহস্বামী বৈষয়িক কাজে কোথায় চলে গেলেন। আমি তাঁর কাছে বিদায় নিয়ে রাখলাম ; তিনি অত্যন্ত দঃখিত হলেন যে, আমার যাবার সময় তাঁর সঙ্গে দেখা হবে না। বাড়িতে পরিষমানষের মধ্যে একজন চাকর, ক্ষেতখামারের কাজ দেখে আবার ক্ষেতের তারি-তরকারি হাটে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে। আমার খাওয়ার জায়গা বাইরের ঘরের সঙ্গে একটা ছোট কুঠরিতে হত, এদিন সে-ই খাবার সময় উপস্থিত রইল। মেয়েরা আমার সামনে বেরতেন না, ভাত দিয়ে তাঁরা চলে যেতেন, খেতে বসে কোনো ‘জিনিসের দরকার হলে ন-দশ বছরের একটি ছোট মেয়ে নিয়ে আসতো। সন্ধ্যার পকেব, গরর গাড়ি এল। আমি জিনিসপত্র গাড়িতে তুলে দিতে বললাম। এমন সময় সেই ছোট মেয়েটি এসে বললে-বাড়ির মধ্যে আসন-ডাকচে মাআমি ভাবলাম আমায় ভুল করে ডাকচে, ছেলেমানষে। আমায় কেন ডাকবেন। তাঁরা ঐ বললাম-কাকে ডাকচোন খাকি ? আমি নয়, তোমার ভুল হয়েছে। --না, মা বললেন। আপনাকে ডেকে নিয়ে আসতেঅগত্যা খাকির সঙ্গে আমি বাড়ির মধ্যে গেলাম। গিয়ে দেখি নীচমত চালাওয়ালা একটা দাওয়ায় একখানা আসন পাতা, তার সামনে থালায় খাবার সাজানো ৷ খাকি বললে—আপনাকে মা খেতে বলেচেন-আপনি গাড়িতে যাবেন, কোথাও -খাওয়া হবে কি না, খেয়ে নিন। আমি সত্যই অবাক হয়ে গিয়েচি তখন। এখান থেকে চার মাইল দরবত্তী সেন্টশনে গিয়ে রেলে চাপবো এবং প্রায় সারারােতই ট্রেনে কাটাতে হবে-এ অবস্থায় খাওয়া হবে না তো নিশ্চয়ই, কিন্তু মেয়েরা সেকথা আন্দাজ করলেন কি করে—এই ভেবে আমি আশচয্য না হয়ে পারলাম না। খেতে বসে গেলাম অবিশ্যি। আমি ব্রাহ্মণ মানষে, সয্যে ডববার পর্বে দ্য বার ভাত খাবো না-বোধ হয়। এই কথা ভেবে মেয়েরা খেতে দিয়েচেন চিগড়ে খইয়ের লাড়, নারকোলের লাড়, মড়কি, দধি, কলা ইত্যাদি। —মতো ছোট। যতক্ষণ থালার সমস্ত খাবার নিঃশেষ না করলাম, ততক্ষণ মেয়েরা ছাড়লেন না। —ছোট মেয়েটিকে দিয়ে বার বার অনরোধ করতে লাগলেন এটা খেতে ওটা খেতে । “তাঁদের আগ্রহে ও আন্তরিকতায় আমার মনে যে ভাব জাগলো-তা হল নিছক বিসময়ের ভাব। কেন আমাকে খাওয়ানের জন্যে এদের এত আগ্রহ ? অতিথি বিদায় নিয়ে গেলে R