পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেশে আসেন খািব কম। ইতিমধ্যে সেই ছোট মেয়েটি আবার এল-আমি জিজ্ঞেস করলাম, এই মেয়েটি আপনার বাড়ির, না ? —না, এটি আমাদের পাশের বাড়ির। ও এসে আমাদের বাড়িতে মাঝে মাঝে সাহায্য করে আমার সন্ত্রীর। বড় ভালো মেয়েটি। ওরও কেউ নেই, দিদিমার কাছে মানষি হচ্চে-দিদিমার অবস্থাও বিশেষ ভালো নয়, গ্রামের লোকদের দয়ায় একরকম করে চলে । বাঙালী পরিবারের দঃখের কাহিনী সব জায়গাতেই অনেকটা এক রকম, কি আমার নিজের জেলায়, কি সদর ঢাকা জেলায়। শনে দঃখিত হওয়া ছাড়া অন্য কিছ করার নেই। ওখান থেকে বিদায় নিয়ে সম্বুকুলে চলে আসবার পথে সন্ধ্যা হয়ে এল। ড্রইং মাস্টার আমার সঙ্গেই ছিল—কি জানি কেন এই নিরীহ গ্ৰাম্য ইস্কুলমাস্টারের ওপর আমার একটা অদভুত ধরনের মায়া জন্মেচে। যেন মনে হচ্চে ওকে ছেড়ে যেতে আমার খব কািন্ট হবে। আমার কলেজের সহপাঠী বন্ধটির চেয়েও এই লোকটি আমার আপনার জন হয়ে উঠেচে এই ক-দিনে। বললাম-আপনি কলকাতার দিকে আসন না কেন ? —কি যে বলেন বাবা, খেতেই পাইনে তার কোথা থেকে ভাড়া যোগাড় করে কলকাতায় যাবো। আমার এক মাসের মাইনে। আর কলকাতায় গিয়েই বা আমার মতো নম্পমাল পাস পন্ডিত কত টাকা মাইনে পাবে ? কথাটার মধ্যে ব্যক্তি ছিল। সতরাং চােপ করে রইলাম। আমরা স্কুলের কাছে পৌছতেই কতকগলি ছেলে আমাদের আলো হাতে এগিয়ে নিতে এল। ওরা আমাদের সবুকুলের হলে গেল নিয়ে। সেখানে গিয়ে দেখি মহাকান্ড। খাব রান্নাবান্না চলচে। বড় ডেকে পোলাও চড়েচে, প্রকান্ড দটো বড় মাছ কোটা হচ্চে, আরও দা ডেক পোলাও রধিবার মালমশলা ডালায়। ছেলেদের উৎসাহ ছাপিয়ে উঠেচে মাস্টারদের উৎসাহ-তাঁরা নিজেরাই ছোটাছটি করে রান্নার তদারক কারচেন, কোথায় খাওয়ার পাত পাতা হবে তার ব্যবস্থা করচেন-ইত্যাদি। আমায় ঘিরে কয়েকজন মাস্টার এসে দাঁড়ালেন। একজন বন্ধ শিক্ষক বললেন—আপনাকেই খাজাঁচ-কোথায় গিয়েছিলেন ? ক-দিন এসেচেন, আমাদের মাস্টারবাবার পরম বন্ধ আপনি, আপনার সঙ্গে আলাপ दीदा ७0|- আমি ড্রয়িং মাস্টারকে দেখিয়ে বললাম-এর বাড়ি চায়ের নিমন্ত্রণ ছিল-আমাদের হরনাথের বাড়ি ? বেশ-বেশএই রকম একটি অপরিচিত স্থানে আমি সেদিন যে আন্তরিক আপ্যায়ন, হৃদ্যতা ও সমাদর লাভ করেছিলাম, তা জীবনে কখনো ভুলবাের নয়। অথচ আমার সঙ্গে তাঁদের কালু-গার্থের সম্পর্ক নেই কােনাে দিক দিয়েই—আমার খাতির করে তাঁদের aाएछ द5 ? আমায় ও আমার বন্ধটিকে মাঝখানে নিয়ে ওঁরা খেতে বসলেন। কত রকম গল্পগজিব, হাসিখশি। একজন শিক্ষক বললেন,-আমাদের দেশ কেমন লাগলো আপনার ? --বড় ভালো লেগেচে, পািব্ববঙ্গের লোকের প্রাণ আছে। A SR