পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার গ্রামে ইছামতী-তীরের মাঠে এ রকম অনেক ঝোপ আছে, শনি-রবিবারের "অবকাশে। কতদিন এ ধরনের ঝোপে বসে মাথার ওপরকার নিবিড় শাখাপত্রের অন্তরালবত্তীর্ণ নানাজাতীয় বিহঙ্গের কল-কাকলির মধ্যে আপন মনে বই পড়ে বা লিখে সুদৃঢ়পর কাচিয়েচ, দূরপ্রবাসে সে কথা মনে পড়ে Y OO DD L D VC হাঁটতে হাঁটতে, এইবার পাহাড় নিকটে এল ক্রমশ । পাহাড়ের ওপরের বন সবজের ঢেউ-এর মতো নীচে নেমে এসেচে। কত রকমের গাছ, প্রধানত শাল ও পড়াশী, আরও অজানা নানা গাছ। মহীয়া গাছ। এ অঞ্চলে কোথাও দেখিনি। পাহাড়ের ওপরকার বন বেশ ঘন, বড় বড় পাথরের চাই পাহাড়ের পাদদেশে অনেকদরে পয্যন্ত ছড়ানো, মাঝে মাঝে নেমে এসেচে পাহাড়ী কারন । আমরা একটা পাহাড়ে উঠলাম-কাঠ কুড়তে যায় গ্রাম্য লোকে যে সর, পথ বেয়ে, সেই পথে দজনে অতি কন্টে লতা ধরে ধরে উঠি—আবার হয়তো একটা শিলাখন্ডে বসে কিছদ্মক্ষণ বিশ্রাম করি—আবার উঠি। এ পাহাড়ের কোথাও জল নেই।--দইজনেরই ভীষণ পিপাসা পেয়েচে, হেমেনের রীতিমত কন্ট হচ্ছে। আমি বেশ বঝতে পারলাম, কিন্তু কিছই করবার নেই। তা ছাড়া বস্তি থেকে অনেক দরে নিজজন বন-প্রদেশে এসে পড়েচি, লোকজনের :মািখ দেখা যায় না, গলার সােবরও শোনা যায় না। হেমেন বললে—ঠিক পথে যাচি তো ? —তা কি করে বলবো ? তবে অন্য পথ যখন নেই-তখন মনে হচ্চে আমরা ঠিকই চলেচি। —বন যে রকম ঘন, কোনো রকম জানোয়ার থাকা অসম্পভব নয় যে, একটা সাবধানে চলে । আমরা পাহাড়ের মাথায় উঠে দেখি আমাদের সামনে দিয়ে পথটা আবার নীচের উপত্যকায় নেমে গিয়েচে । আমরাও নামতে লাগলম সে পথ ধরে। একেবারে উপত্যকার মধ্যে নেমে এলাম। যখন, তখন চোখে পড়লো। ওদিকে আর একটা পাহাড়শ্রেণী, এর সঙ্গে সমান্তরাল ভাবে চলে গিয়েচে, মধ্যে এই বনাকীর্ণ উপত্যকা—বিস্তুতিতে প্রায় দ-তিনশো গজ হবে। শালবনের মধ্যে ক্ষদ্র একটি পাহাড়ী নদী রাঙা বালির ওপর দিয়ে বয়ে চলেচেপায়ের পাতা ডোবে না। এত অগভীর। হেমেন জল খাবেই, আমি নিষেধ করলাম। বিশ্রাম না করে জলপান করা যক্তিযক্তি হবে না। বরং তার আগে সন্নান করে নেওয়া .यादS । কিন্তু সন্নান করি কোথায় ? অত অগভীর জলে সনান করা চলে না। হেমেন বললে—তুমি বোসো, আমি বনের মধ্যে কিছদার বেড়িয়ে দেখে আসি, জল কোথাও বেশি আছে কিনা বেলা ঠিক একটা, ঝাঁ ঝাঁ। কারচো খর রোদ, কাঁচা শালপাতা বিছিয়ে বনের ছায়ায় শয়ে পড়লাম-যেমন ক্ষধা, তেমনি তৃষ্ণা, দইই প্রবল হয়ে উঠেচে। অদ্ভুত ধরনের নিজজনতা এ উপত্যকার মধ্যে-এরই নাম কাজরা ভ্যালি বোধ হয়-কেউ বা বলবে এর ওই ইংরাজী নাম কি না ? হেমেনকে একা ছেড়ে দেওয়া ঠিক হয়নি, কারণ এমন Q也