পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এইবার আমি বাবলাম। দীর থেকে ভালো বোঝা যাচ্ছিল না। বন্ধকে বললিম-ওগ্যুলো আসলে বাদােড় কুলচে গাছের ডালে-দর থেকে ফলের মতো দেখাচ্চে হেমেন তো অবাক। সে এমন ধরনের বাদােড় ঝোলার দশ্য এর আগে কখনো দেখেনি বললে। কাজরা ভ্যালির সে গম্ভীর দশ্য জীবনে কখনো সত্যি ভোলবার কথা নয়। দদিকে দটাে পাহাড়শ্রেণী, মাঝখানে এই বনময় উপত্যকা, বিশালবনস্পতি-সমাকুল, নিভজন, নিস্তব্ধ। আমার কানে ঝরনার শব্দ গেল। দাজনে ঝরনার শব্দ ধরে সামনের দিক দিয়ে দরে পাহাড়শ্রেণীর তলায় বনের মধ্যে একটা মন্দিরের চুড়ো দেখতে পেলাম। ওই নিশ্চয়ই ঋষ্যশঙ্গ মানির আশ্রম। হেমেন বললে-আমার সটকেসটা আশ্রমের বালক-বালিকারা নেয়নি তো হে ? বনের মধ্য দিয়ে আমরা মন্দিরের কাছে পৌছে গেলাম। জায়গাটিার দশ্য বড় সিন্দর। একদিকে মন্দিরের কুড়ি হাত দরে বাঁ পাশে একটা বড় ঝরনা পাহাড়ের ওপর থেকে পড়চে। আমাদের সামনে একটা গহা-গহায় ঢাকবার জায়গাটাতেই মন্দির, পাহাড়ের একেবারে তলায়। বহ প্রাচীন জায়গাটাতেই মন্দির, দেখলেই বোঝা যায়। নিজজন সােথান, দদিকে পাহাড়শ্রেণী, মধ্যে এই সন্দর উপত্যকা—প্রাচীন ভারতের পবিত্র আশ্রমপদের ছবি ‘মনে জাগায় বটে! রোদ তখন পড়ে আসচে, পশ্চিম দিকের পাহাড়শ্রেণীর ছায়া পড়েচে উপত্যকায়-কত কি পাখী ডাকচে চারিদিকের গাছপালায়। হেমেনও বললেবড় সন্দর জায়গাটি তো! আমাদের চোখের সামনে আশ্রমের ছবিকে পণতা দান করবার জন্যেই যেন এক সন্ন্যাসিনী মন্দির থেকে বেরিয়ে এলেন। আমরা তো অবাক! এই বনের মধ্যে “সন্ন্যাসিনী ! সন্ন্যাসিনী আমাদের দেখতে পেয়ে কাছে এলেন। তেমন সন্দেরীও নন, বিশেষ তরণীও নন। বয়স ত্ৰিশের ওপর, তবে দেহের বৰ্ণ সন্দর, অনেকটা গঙ্গাজলী গমের মতো। মাথায় একঢ়াল কালো চুলে কিছ কিছ: জট বোধেচে। পরনে গৈরিক বসন। আমাদের হিন্দিতে বললে—কোথা থেকে আসাঁচ "ছেলেরা ? —ভাগলপর থেকে মাঈজী। - ऊाऊ ? —আমরা দরজনেই ব্ৰাহ্মণ। --হোটে এলে ? -আজ্ঞে। কাজরা সেন্টশনে বেলা নটার সময় নেমে হাঁটাচি । —আজি তোমরা ফিরতে পারবে না। এইখানেই থাকো। আমি হেমেনের মাখের দিকে চাইলাম। তারপর দজনে মিলে চারিদিকে চাই“লিম-থাকবো কোথায় ? ঘরদের তো কোনোদিকে দেখি না। গাছতলায় নিশ্চয়ই রাত্ৰিষাপন করার প্রস্তাব করেননি। মাতাজী। সন্ন্যাসিনী বললেন-বাবা, তোমরা থাকো, থাকতেই হবে-সন্ধ্যা হবে সামনের পাহাড় পেরিয়ে যাবার আগেই হয়তো। ত ছাড়া দরকারই বা কি কষ্ট করে যাবার ? :থাকবার ভালো জায়গা আছে। কিন্তু কোথায় ? চোখে তো পড়ে না কোনোদিকে। হেমেন ও আমি আর একবার চারদিকে চেয়ে দেখলাম। হেমেন চক্ষলােভজা বিসর্জন দিয়ে বললে,-মাতাজী, আমরা থাকব। কোথায় ? A yo