পাতা:দিবারাত্রির কাব্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দিবরাত্রির কাব্য У У о. এঘরে টেনে আনা যাবে না। একান্ত ব্যক্তিগত কথা ছাড়া তাদের আর বলবার কিছু নেই। অথচ, এই সীমাবদ্ধ আলাপেও যে কথাগুলি তারা বলতে পারছে সেগুলি বাজে, অবাস্তর। বোমার মত ফেটে পড়তে চেয়ে তাদের তুড়ি দিয়ে খুন্সী থাকতে হচ্ছে। এ অবস্থা যে সুখের নয়, কাম্য নয়, হেরম্বের তা স্বীকার করতে হল । কিন্তু ক্ষতিপূর্ণ যে এই অসুবিধাকে ছাপিয়ে আছে একথা জানাতেও তার বাকী ছিল না । পরস্পরের কত অনুচ্চারিত চিন্তাকে তারা শুনতে পাচ্ছে । তাদের কত প্রশ্ন ভাষায় রূপ না নিয়েও নিঃশব্দ জবাব পাচ্ছে। সাড়ীর প্রান্ত টেনে নামিয়ে পায়ের পাতা ঢেকে দিয়ে সে বলছে, পা দু’টি তার অতি করে দেখবার মত নয় ; আঁচলের তলে, হাত দু’টি আড়াল করে বলছে, পা দেখতে দিলাম না বলে তুমি আমন, করে আমার হাতের দিকে তাকিয়ে থাকবে, তা হবে না । সে তার মুখের দিকে চেয়ে জবাব দিচ্ছে ; এবার তুমি মুখ ঢাকো কি করে । দেখি ! আনন্দের মৃদু রোমাঞ্চ ও আরক্ত মুখ প্ৰতিবাদ করে বলছে, " আমাকে এমন করে হার মানানো তোমার উচিত নয়। দরজার দিকে চেয়ে আনন্দ ভয় দেখাচ্ছে, আমি ইচ্ছে করলেই উঠে চলে যেতে পারি। হঠাৎ তার মুখে বিষঃত ঘনিয়ে আসছে। তার চোখ ছলছল করে উঠছে। চোখের পলকে সে অন্যমনস্ক হয়ে গেল। এও ভাষা, সুস্পষ্ট বাণী । কিন্তু এর অর্থ অতল, গভীর, রহস্যময় । তার কত ভয়, কত প্রশ্ন, নিজের কাছে হঠাৎ নিজেই দুর্বোধ্য হয়ে উঠে তার কি নিদারুণ কষ্ট, হেরম্ব কি তা জানে ? তার মন কতদূর উতলা হয়ে উঠেছে হেরম্ব কি তার সন্ধান রাখে ? একটা বিপুল সম্ভাবনা গুহা-নিরুদ্ধ নদীর মত ད།