পাতা:দিবারাত্রির কাব্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দিবরাত্রির কাব্য Σ Σ\υ “ঠিক করে কিছুই বুঝতে পারছি না। আরও যেন কত কি দুঃখ একসঙ্গে ভোগ করছি। আচ্ছা তুমি তো কবি, তুমি কিছু বুঝতে পারছি না ?” ‘আমি কবি নই, আনন্দ । আমি সাধারণ মানুষ।” আনন্দ তার এই সবিনয় অস্বীকারের প্রতিবাদ করল । “তুমি আমার কবি। কবি না হলে কেউ এমন ঠাণ্ডা হয় ? সন্ধ্যার সময় তোমাকে দেখেই আমি চিনেছিলাম। তুমি না থাকলে আমি এখন এখানে গড়াগড়ি দিয়ে কেঁদে নাচের জ্বালায় জ্বলে জ্বলে মরে যেতম৷ ” “জাল কমে নি আনন্দ ?” ‘কমেছে ৷” “নাচ শেষ করবে ?” “না। নাচ শেষ করে ঘুমোবে কে ? তার চেয়ে এ কষ্টও ভাল। ঘুম তো মরে যাওয়ার সমান, শুধু সময় নষ্ট।” আনন্দ হঠাৎ উৎকৰ্ণ হয়ে বলল, “ক’টা বাজল ? অনেক দূরে থানায় ঘণ্টা বাজছে । ক’টা বাজল শুনলে ?” হেরম্ব বলল, “ও ঘণ্টা ভুল, আনন্দ । এখন ঠিক মাঝরাত্রি।” আনন্দ বলল, “তাই হবে, চাদটা আকাশের ঠিক মাঝখানে এসেছে।’ ওইখানে, আকাশের চাদের কাছে পৌছে, আনন্দ একেবারে নির্বাক হয়ে গেল। হেরম্বের দেহের আশ্রয়ে নিজের দেহকে আরও নিবিড়ভাবে সমৰ্পণ করে সে আকাশের নিম্প্রভ তারা আবিষ্কারের চেষ্টা করতে লাগিল ।