পাতা:দিবারাত্রির কাব্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দিবরাত্রির কাব্য S QR ‘অনাথের জন্য এক-পাকের রান্না চড়ায় আর নিজের অসংখ্য বিস্ময়কর "ছেলেমানুষী নিয়ে মেতে থাকে। ফুলগাছে জল দেয়, আঁকশী দিয়ে ‘গাছের खैरु ডালের ফল পাড়ে, কেঁচড়ভরা ফুল নিয়ে মালা গেথে গোঁথে ‘অনাথের কাছে বসে গল্প শোনে । হেরম্বের পাকা মন, যা আনন্দের সংশ্রবে এসে উদ্বেল আনন্দে কঁচা হয়ে যেতে শিখেছে, খারাপ হয়ে যায়। সে কোনদিন ঘরে বসে কিমায়, কোনদিন বেরিয়ে পড়ে পথে ; জগন্নাথের বিস্তীর্ণ মন্দির-চত্বরে, সাগরসৈকতের বিপুল উন্মুক্ততায়, আপনার হৃদয়ের খেলা নিয়ে সে মেতে থাকে । মিলন আর বিরহ, বিরহ আর মিলন। দেয়ালের আবেষ্টনীতে ধূপগন্ধী অন্ধকারে বন্দী জগন্নাথ, আকাশের সমুদ্রের দিকহীন ব্যাপ্তির দেবতা। পথে কয়েকটি বিশিষ্ট অবসরে সুপ্রিয়াকেও তার স্মরণ করতে হয় । কাব্যোপজীবীর দৈহিক “ক্ষুধাতৃষ্ণ নিবারণের মত এক অনিবাৰ্য্য বিচিত্র কারণে সুপ্রিয়ার চিন্তাও মাঝে মাঝে তার , কাছে প্ৰয়োজনীয় হয়ে ওঠে। এই বাড়ী আর * বাগানের আবেষ্টনীর মধ্যে সে যতক্ষণ থাকে, পৰ্য্যায়ক্রমে তীব্র আনন্দ ও গাঢ় বিষাদে সে এমনি আচ্ছন্ন হয়ে থাকে যে তার চেতনা আনন্দকে অতিক্রম করে সুপ্রিয়াকে খুজে পায় না। পথে বার হয়ে অন্যমনে ঠাঁটতে হাটতে সে যখন সহরের শেষ সীমা সাদা বাড়ীটির কাছে পৌঁছয়, তখন থেকে সুরু করে তার মন ধীরে ধীরে পার্থিব বিষয়ে সচেতন হয়ে উঠতে থাকে। সে স্পষ্ট অনুভব করে, একটা রঙীন, স্তিমিত আলোর জগৎ থেকে সে পৃথিবীর দিবালোকে নেমে আসছে। ধূলিসমাচ্ছন্ন পথ, দু’দিকের দোকানপাট, পথের জনতা তার কাছে এতক্ষণ ফোকাস-ছাড়া