পাতা:দিবারাত্রির কাব্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

RG দিবরাত্রির কাব্য আনন্দ তার এই বিদ্যার পরিচয়ে মুগ্ধ হল না। বলল, “তারপর কি छळ दांदा ? হোরম্বের মনে হয়, আনন্দ তাকে অবহেলা করেছে । তার অস্তিত্বকে আনন্দের এ পরিপূর্ণ বিস্মরণ। বাগানে আনন্দের ঘাড় নাড়া ধরলে এই নিয়ে দু’বার হল। সকালের সুরু দেখে আজকের দিনটি হেরম্ব মোটামুটি নিরানন্দের মধ্যে কাটিয়ে দেবারও আশা করতে পারে না । এদিকে মালতী এসে নচিকেতার কাহিনীতে বাধা জন্মায়। ‘তারপর কি হল বাবা! কচি খুকীর মত সকালে উঠে গল্পে গিলছিস্ ? স্নান-টান করে মন্দিরটা খোল না গিয়ে । কাজের সময় গল্পো কি ?” অনাথ বলে, “এমনি করে বুঝি বলতে হয় মালতী ?” “কি করে বলব। তবে ? একটা কাজ করতে বলার জন্য পেটের মেয়ের কাছে গলবস্ত্র হতে হবে ?” অনাথ চুপ করে যায়। আনন্দ মানের উদ্দেশ্যে চলে যায় পুকুরে। // তার পরিত্যক্ত স্থানটি দখল করে বসে মালতী। হেরম্বের মনে হয়, সেও বুঝি অনাথের কাছে গল্পই শুনতে চায়। যে-কোন কাহিনী। হেরন্থের আবির্ভাবে এদের দু’জনের সম্পর্কে বিশেষ কোন পরিবর্তন ঘটে নি। অনাথের অসঙ্গত অবহেলার জবাবে মালতীর স্বেচ্ছাচারিতা যেমন উগ্র ছিল তেমনি উগ্র হয়েই আছে। কিন্তু তার সমস্ত রুক্ষ আচরণের মধ্যে একটি পিপাসু দীনতা, ক্ষীণতম আশ্বাসের প্রতিদানে নিজেকে আমূল পরিবৰ্ত্তিত করে ফেলবার একটা অনুচ্চারিত প্ৰতিজ্ঞা হেরম্ব আজকাল সর্বদ। আবিষ্কার করতে পারে। বোঝা যায়, অনাথের প্ৰতি মালতীর সমস্ত ঔদ্ধত্য অনাথকে আশ্রয় করেই যেন দাড়িয়ে থাকে।