পাতা:দিবারাত্রির কাব্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Σ Σ দিবরাত্রির কাব্য সুপ্রিয়া পলকহীন চোখে চেয়ে থেকে বলল, “আপনি বাড়ীতে এলে বাইরের ঘরে বসিয়ে এক কাপ চা আর একটু সুজি পাঠিয়ে দিতাম। মনে মনে বলতাম, আপদ বিদেয় হলেই বাচি ।” হেরম্ব একটু হেসে বলল, “আচ্ছা, এবার দশ বছর পরে আসব। মনে তোর ক্ষোভ রাখব না, সুপ্রিয়া।” / সুপ্রিয়া আস্তে আস্তে বলল, “আপনি তা পারেন । ছেলেমানুষ্ঠা পেয়ে ভুলিয়ে ভালিয়ে আমার যখন বিয়ে দিয়েছিলেন তখনি জেনেছিলাম) আপনার অসাধ্য কৰ্ম্ম নেই।” محمے হেরম্ব প্রতিবাদ করে বলল, “আমি তোর বিয়ে দিইনি। সুপ্রিয়া, তোর বাবা দিয়েছিলেন।) হ্যারে, বিয়ের সময় তোকে একটা উপহারও বোধ হয় আমি দিই নি । দিয়েছিলাম ?” সুপ্রিয়া শেষ কথাটা কানে তুলাল না। বলল, “বাবা বিয়ে দিয়েছিলেন বৈ কি ! আমাকে ভজিয়ে ভজিয়ে রাজী করেছিল কে ? কার মুখের বড় বড় ভবিষ্যদ্বাণী শুনে আমি ভেসে গিয়েছিলাম ? কি সব প্ৰকাণ্ড প্ৰকাণ্ড কথা ! কত কথার মানে বুঝি নি। তবু শুনেগা শিউরে উঠেছিল ! আচ্ছা, সে সব কথা অভিধানে আছে ?” জবাব দিতে হেরম্বকে একটু ভাবতে হল। সুপ্রিয়ার ঝগড়া করার ইচ্ছা নেই এটা সে টের পেয়েছিল। কিন্তু তার অনেক দিনের জমানো নালিশ, কলহ না করলেও নালিশগুলি ও জানিয়ে রাখবে । মা জানিয়ে ওর উপায় নেই। মনের নেপথ্যে এত অভিযোগ পুষে রাখলে মানসিক সুস্থত কারো বজায় থাকে না । এখনকার মত কথাগুলি স্থগিত রাখলেও সুপ্রিয়ার চলবে না । সে কাল চলে যাবে, দু’চার বছরের মধ্যে