পাতা:দিবারাত্রির কাব্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S\oዓ দিবরাত্রির কাব্য আসনে লুটিয়ে পড়ে আছে, মৃদু ও দ্রুত নিশ্বাস পড়ছে, অতিরিক্ত রক্তের চাপে মুখ অসুস্থ, রাঙা । মালতী পাগলের মত সেই মুখে করে চলেছে চুম্বনবৃষ্টি ! তাকে ঠেলা দিয়ে হেরম্ব বলল, “শান্ত হন, সরে বসুন, কি হল দেখতে দিন ।” “ও মরে গেছে হেরম্ব, আমি ওকে মেরে ফেলেছি। ” হেরম্বের চিকিৎসা চলল আধা ঘণ্টা । তিনি কলসী জল খরচ হল, মালতীর আউন্সখানেক কারণও কাজে লাগল। তারপর অনাথ চোখ মেলে চাইল । “আঃ, কি কর মালতী ?” বলে আরও খানিকটা সচেতন হয়ে অনাথ বিস্মিত দৃষ্টিতে চারিদিকে তাকাতে লাগল। হেরম্ব জিজ্ঞাসা করল, “কি হয়েছিল ?” মালতী কপাল চাপড়ে বলল, “আমার যেমন পোড়া কপাল ! জন্মদিন বলে একটা প্ৰণাম করতে গিয়েছিলাম, কে জানে তাতেই ভড়কে গিয়ে ভিরমি খাবে। ” অনাথের স্বাভাবিক মৃদুকণ্ঠ আরও ঝিমিয়ে গেছে। সে বলল, ‘আসনে বসলে আমাকে ছুতে তোমায় কতবার বারণ করেছি, মালতী ! কঠিন যোগাভ্যাস করছি, হঠাৎ অপবিত্ৰ স্পর্শ পেলে--” মালতী ইতিমধ্যেই খানিকটা সামলেছে। “কিসের অপবিত্ৰ স্পর্শ ? চান করে আসিনি আমি ? এমনি বিদঘুটে স্বাভাবি জানি বলেই না পুকুরে ডুব দিয়ে এলাম !” “পুকুরে ডুব দিয়ে এলেই মানুষ যদি পবিত্ৰ হােত-”