পাতা:দিবারাত্রির কাব্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৫৯ দিবরাত্রির কাব্য আনন্দ তার ঘরে সমুদ্রের ঝিনুক নিয়ে খেলা করে, তার যখন খুন্সী তাকায়, যখন খুলী কথা বলে। তাদের নিজেদের প্রেমের সমস্যা ছাড়া সে ঘরে দুর্ভাবনার প্রবেশ নিষেধ। কারো জীবনের প্রভাব সেখানে নেই, সুপ্রিয়ারও নয়,-তাকে সে ভুলে যায় । কিন্তু সুপ্রিয়ার কাছে থাকলে একটি বেলার জন্যও তার রেহাই নেই। আবহাওয়া অবিলম্বে বৈদ্যুতিক হয়ে ওঠে। দুর্ঘটনা ঘটে, দুঃসংবাদ পাওয়া যায়। তাদের মাঝখানে আর একটি জীবনের নাটকীয় অভিনয় ঘটে চলে। বাড়ীর ছাদের ভয়ঙ্কর ঘটনাটুকুর সংবাদ সুপ্রিয়া তাকে কেন দিয়েছে বুঝে হেরম্বের বড় কষ্ট হয় । সুপ্রিয়াও কি মালতী হয়ে উঠল ? “কি হয়েছিল ?” হেরম্ব জিজ্ঞাসা করল । “শুনে অবিচার করবেন না । আমাকে ছাদে ডেকে নিয়ে যাবা: সময় ওর কোন মতলব ছিল না, শুধু ছেলেমানুষী খেয়াল। আমাকে ধারে দাড়াতে দেখে লোভ সামলাতে পারে নি । হঠাৎ ‘সুপ্রিয়া’ বলে চেচিয়ে ধ্যা করে আমায় জড়িয়ে ধরলে । আর একটু হলেই দু’জনে ”--SCf>[گو “তোর কথা আমি বিশ্বাস করি না, সুপ্রিয়া ।” সুপ্রিয়া কোনদিন কলহ করে নি, আজও করল না । তার চোখে শুধু জল এল। হেরম্ব একটু নরম হয়ে বলল, “তুই ইচ্ছে করে মিথ্যা বলেছিস, তা বলছি না। সুপ্রিয়া। তুই বুঝতে পারিস নি।” “আমি কিছুই বুঝতে পারি না।” হেরম্ব খানিকক্ষণ স্তব্ধ থেকে বলল, “বড়-বাদলে খোলা ছাদে তোকে কাছে পেয়ে হঠাৎ মনের আবেগে-”