পাতা:দিবারাত্রির কাব্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দিবরাত্রির কাব্য Տ ԳNշ মাঝে মাঝে অন্যমনস্ক হতে পারলেও সর্বদা অন্যমনস্ক থাকা সুপ্রিয়ার পক্ষে অসম্ভব। তার এ কথা হেরম্ব বিশ্বাস করল না । “তুই ইচ্ছা করলেই অশোককে সুখী করতে পারতিস, সুপ্রিয়া ।” সুপ্রিয়া থমকে দাড়াল । “যদি কথা তুললেন, তাহলে বলি। আমি তা পারতাম না। কেউ পারে না। ছেলেখেলা হলে পারতাম, চব্বিশ ঘণ্টা একসঙ্গে থাকা ছেলেখেলা নয়। ও বিনাদোষে মারা গেল, কিন্তু উপায় কি, সংসারে অমন অনেকে যায়। ওর সত্যি কোন উপায় নেই।” দুর দিগন্তে চোখ রেখে হেরম্ব বলল, ‘তবু অশোককে নিয়ে তুই যদি জীবনে সুখী হতে পারতিস, তাহলে তোর প্রশংসা করতাম সুপ্রিয়া ।” ‘কথাটা ভেবে বললেন ?? ‘ভেবে বললাম। মনকে তুই একেবারে উন্মুক্ত করে দিলি, কিছু ঢাকবার চেষ্টা করলি না । সত্যকে সহ্য করবার স্পৰ্দ্ধা দেখিয়েছিস বলেই কথাটা বললাম। বিচলিত হলে চলবে কেন ? ওর ভাল-মন্দের দায়িত্ব তোরও অনেকখানি আছে বৈকি ৷” সুপ্রিয় রুক্ষম্বরে বলল, “আপনার কথার মানে হয় না । ওর ভালমন্দর সঙ্গে আমার সম্পর্ক কি ? রূপাইকুড়াতেও আপনি আমাকে এসব বলে অপমান করতেন। আপনার ভুল হয়েছে, স্বামী আমার সমস্যা নয়, আপনিই তাকে শিখণ্ডীর মত সামনে খাড়া করে রেখে আমার সঙ্গে লড়াই করছেন।” এবার হেরম্বের চুপ করে যাওয়াই উচিত ছিল। কিন্তু কোন অবস্থাতেই তর্কে হার মানা হেরম্বের স্বভাব নয়।